ইরানের সর্বোচ্চ নেতা মঙ্গলবার বলেছেন যে বিশ্বশক্তির সঙ্গে পারমাণবিক আলোচনার সাফল্য বা তা বন্ধ হয়ে যাওয়ার সাথে তার দেশের ভবিষ্যত যুক্ত হওয়া উচিত নয়। ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যমের রিপোর্টে বলা হয়েছে যে ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তি পুনরায় শুরু করার জন্য আলোচনা “ভালভাবে এগিয়ে চলেছে।”
ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির মতো সব রাষ্ট্রীয় বিষয়ে চূড়ান্ত মতামত আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির। ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে প্রায় এক বছরের পরোক্ষ আলোচনা স্থগিত হওয়ার প্রায় এক মাস পর তিনি ঐ মন্তব্য করেন। উভয় দেশই অবশিষ্ট বিষয়গুলি সমাধানে রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাবের জন্য একে অপরকে দোষারোপ করে।
রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শীর্ষ কর্মকর্তাদের একটি সমাবেশে খামেনি বলেন “দেশের জন্য পরিকল্পনা এবং এগিয়ে যাওয়ার জন্য অবশ্যই পারমাণবিক আলোচনার জন্য অপেক্ষা করবেন না।”
তিনি আরও বলেন,“আলোচনা ইতিবাচক বা আধা-ইতিবাচক বা নেতিবাচক ফলাফলে পৌঁছাক না কেন আপনাদের কাজকে ব্যাহত হতে দেবেন না।”
২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প পরমাণু চুক্তি থেকে বেরিয়ে এসে ইরানের অর্থনীতিকে পঙ্গু করে দেয়া নিষেধাজ্ঞাগুলো পুনরায় আরোপ করেন। এর এক বছর পরে ইরান ২০১৫ সালে করা চুক্তিতে বোমা তৈরি করা আরও কঠোর করার জন্য তার পারমাণবিক কর্মসূচির উপর যেসীমা আরোপ করা হয়েছিল তা তারা লঙ্ঘন করতে শুরু করে। ইরান বলছে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি কেবলমাত্র শান্তিপূর্ণ ব্যবহারের জন্য।
খামেনি বলেন,“যুক্তরাষ্ট্র তার প্রতিশ্রুতি (চুক্তি থেকে বেরিয়ে এসে) ভঙ্গ করেছে এবং তারা এখন শেষ সীমায় পৌঁছেছে কিন্তু ইরান এমন পরিস্থিতিতে নেই”। তিনি বলেন, “আমেরিকার অত্যধিক দাবির বিরোধিতা” চালিয়ে যাওয়ার জন্য ইরানের পারমাণবিক আলোচকদের তিনি আহ্বান জানান।
পারমানবিক চুক্তিটি পুনরায় শুরু করার দাবির প্রেক্ষিতে তেহরান চাইছে যে অমীমাংসিত সমস্যাগুলির মধ্যে একটি হচ্ছে ওয়াশিংটনকে ইরানের অভিজাত রেভল্যুশনারি গার্ডস কোর (আইআরজিসি) যাকে যুক্তরাষ্ট্র বিদেশী সন্ত্রাসী সংগঠনের (এফটিও) তালিকায় রেখেছে সেখান থেকে সরিয়ে নিতে হবে।
আইআরজিসিকে তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার যারা সমালোচক এবং যারা এই বিষয়টি সমর্থন করেন তারা বলছেন যে এটি করার ফলে অর্থনীতির উপরে খুব কম প্রভাব পড়বে কারণ আমেরিকার আরোপিত অন্যান্য নিষেধাজ্ঞার ফলে বিদেশী রাষ্ট্রসমূহ ঐ গ্রুপকে এড়িয়ে যেতে বাধ্য করবে।
ইসলামিক প্রজাতন্ত্রের প্রয়াত প্রতিষ্ঠাতা আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেনি আইআরজিসিকে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন একটি সামরিক শক্তির চেয়েও বেশি কিছু হিসেবে এবং এর বিশাল রাজনৈতিক প্রভাব রয়েছে। ২০১৭ সালে ঐ সামরিক দলটিকে নিষেধাজ্ঞার অধীনে রাখা হয়েছিল এবং ২০১৯ সালের এপ্রিল মাসে আইআরজিসিকে এফটিও-র তালিকা ভুক্ত করা হয়।