প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সোমবার (১১ এপ্রিল) ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ভার্চ্যুয়ালি দেখা করবেন বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউজ। এর আগে যুক্তরাষ্ট্র স্পষ্ট করে জানিয়েছে যে, তারা চায় না রাশিয়া থেকে ভারতের জ্বালানি আমদানি বৃদ্ধি পাক।
প্রেস সেক্রেটারি জেন সাকি রবিবার এক বিবৃতিতে বলেছেন, “প্রেসিডেন্ট বাইডেন ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার নৃশংস যুদ্ধের পরিণতি এবং বিশ্বব্যাপী খাদ্য সরবরাহ ও পণ্যের বাজারের ওপর এর অস্থিতিশীল প্রভাব হ্রাস করার বিষয়ে পরামর্শ চালিয়ে যাবেন”।
যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক অর্থনীতির উপ-জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা দালীপ সিং, যিনি সম্প্রতি ভারত সফর করেছেন, তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়া থেকে জ্বালানি আমদানিতে ভারতের জন্য কোনো “সীমারেখা” নির্ধারণ করবে না, তবে আমদানিতে “দ্রুত বৃদ্ধি” দেখতে চায় না তারা।
ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে ইউক্রেন আক্রমণ করার পর থেকে রাশিয়ার সংস্থাগুলোর ওপর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার সুত্র ধরে ব্যাপক মুল্য ছাড়ের প্রলোভনে, ভারত কমপক্ষে ১৩ মিলিয়ন ব্যারেল রাশিয়ান অপরিশোধিত তেল কিনেছে। রয়টার্স সংকলিত ডেটা থেকে জানা যায়, গত বছরজুড়ে আমদানি ছিল ১৬ মিলিয়ন ব্যারেল।
হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, এই বৈঠকটি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুব্রামানিয়াম জয়শঙ্কর ও ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের মধ্যে “যুক্তরাষ্ট্র-ভারত ২+২ মন্ত্রী পর্যায়ের” বৈঠকের আগে অনুষ্ঠিত হবে।
বাইডেন সর্বশেষ মার্চ মাসে মোদির সাথে সাক্ষাৎ করেন। তিনি সম্প্রতি বলেন যে, কোয়াড গ্রুপের দেশগুলোর মধ্যে একমাত্র ভারতই রাশিয়ার ইউক্রেনে আক্রমণের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার ক্ষেত্রে “কিছুটা নড়বড়ে” ছিল।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশটি রাশিয়া ও পশ্চিমের সঙ্গে তার সম্পর্কের ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা করেছে। কিন্তু কোয়াড দেশগুলোর অন্য সদস্যদের—যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও অস্ট্রেলিয়া—মতো রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেনি।
গত এক দশকে ভারত যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে ক্রয় বাড়ানো সত্ত্বেও রাশিয়া দীর্ঘদিন ধরে ভারতের প্রতিরক্ষা সরঞ্জামের সবচেয়ে বড় সরবরাহকারী।
দালীপ সিং তার সফরের সময় বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ভারতকে তার জ্বালানি ও প্রতিরক্ষা সরবরাহে পরিবর্তন আনতে সাহায্য করতে প্রস্তুত। ভারত বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম তেল আমদানিকারক ও গ্রাহক।
ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর রুবলের মূল্য পড়ে গেলেও সাম্প্রতিক দিনগুলোতে আবার চাঙ্গা হতে শুরু করেছে। দালীপ সিং এ বিষয়ে সতর্ক করেন যে, যুক্তরাষ্ট্র চায় না যে, তার মিত্ররা রুবলের মূল্য পুনরুদ্ধারে সহায়তা করুক।
সাকি বলেন, বাইডেন ও মোদি কোভিড-১৯ মহামারির অবসান, জলবায়ু সংকট মোকাবিলা, বৈশ্বিক অর্থনীতিকে শক্তিশালী করা এবং নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও সমৃদ্ধির জন্য ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে একটি অবাধ, উন্মুক্ত, নিয়মভিত্তিক আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা বজায় রাখাসহ বিভিন্ন বিষয়ে সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করবেন।