অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির এক গবেষণায় দেখা গেছে, কোভিড-১৯ মস্তিষ্ককে সঙ্কুচিত করার পাশাপাশি আবেগ ও স্মৃতিশক্তি নিয়ন্ত্রণ করে মস্তিষ্কের এমন ধূসর পদার্থ (গ্রে ম্যাটার) কমিয়ে দিতে পারে এবং ঘ্রাণশক্তি নিয়ন্ত্রণকারী অংশের ক্ষতি করতে পারে।
বিজ্ঞানিরা বলেন, হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়নি এমন রোগীদের ক্ষেত্রেও এই প্রভাবগুলো লক্ষ্য করা গেছে। তবে এই প্রভাবগুলো আংশিক নাকি দীর্ঘমেয়াদি তা জানতে আরও পরীক্ষা নিরীক্ষার প্রয়োজন।
“কোভিড সংক্রমণের কারণে মস্তিষ্ক-সম্পর্কিত অস্বাভাবিকতার যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে”, সোমবার (৭ মার্চ) প্রকাশিত গবেষণায় গবেষকেরা বলেন।
এমনকি গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে মৃদু উপসর্গের রোগীদের ক্ষেত্রেও, মনযোগ ও সংগঠিত করার জন্য দায়ী মস্তিষ্কের “কার্যনির্বাহক নির্দিষ্ট ক্রিয়ার (executive function) অবনতি” ঘটতে দেখা গেছে এবং গড়ে মস্তিষ্কের আকার ০ দশমিক ২ শতাংশ থেকে ২ শতাংশ পর্যন্ত সঙ্কুচিত হয়েছে।
ন্যাচার জার্নালে প্রকাশিত জুটিভিত্তিক পর্যালোচনামুলক গবেষণায় ৫১-৮১ বছর বয়সী ৭৮৫ জন অংশগ্রহণকারীর মস্তিষ্কের পরিবর্তনগুলো পরীক্ষা করা হয়েছে। তাদের মস্তিষ্ক দুবার স্ক্যান করা হয়েছিল, যার মধ্যে ৪০১ জন দুটি স্ক্যানের মাঝামাঝি কোভিড আক্রান্ত হন। দ্বিতীয় স্ক্যানটি প্রথম স্ক্যানের ১৪১ দিন পরে করা হয়।
যুক্তরাজ্যে আলফা ধরনের ব্যপক বিস্তারের সময় গবেষণাটি পরিচালিত হয় এবং এর মধ্যে ডেলটা ধরনে সংক্রামিত কাউকে অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব ছিল না।
গবেষণায় এমন কিছু মানুষকে পাওয়া গেছে, যারা কোভিড আক্রান্ত হওয়ার পর ব্রেইন ফগ বা মানসিক অস্পষ্টতায় ভুগছেন। এর মধ্যে রয়েছে মনোযোগের অভাব, তথ্য প্রক্রিয়াকরণের গতি এবং স্মৃতিশক্তির প্রতিবন্ধকতা।
কোভিড টিকা এই অবস্থার ওপর কোনো প্রভাব ফেলে কি না তা বলেননি গবেষকেরা। তবে যুক্তরাজ্যের হেলথ সিকিউরিটি এজেন্সি গত মাসে বলেছে যে, ১৫টি গবেষণার পর্যালোচনায় দেখা গেছে যে টিকা দেওয়া ব্যক্তিদের দীর্ঘ কোভিডের লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা টিকা না দেওয়া লোকেদের তুলনায় প্রায় অর্ধেক।