রাশিয়া বৃহস্পতিবার দিনের শুরুর দিকে ইউক্রেনে আক্রমণ আরম্ভ করে। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন অন্যান্য দেশকে সতর্ক করেছেন যাতে তারা হস্তক্ষেপ না করে। অপরদিকে, ইউক্রেনের পশ্চিমা মিত্ররা রাশিয়ার আক্রমণের নিন্দা জানিয়ে, ইউক্রেনের প্রতি তাদের সমর্থন ও নতুন দফায় কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপের অঙ্গীকার করেছে।
পুতিন টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক বক্তৃতার মাধ্যমে পূর্ব ইউক্রেনে সামরিক অভিযান আরম্ভ করার ঘোষণা দেন। তার ভাষ্যমতে ইউক্রেনের হুমকির প্রতিক্রিয়া হিসেবে এই অভিযান চালানো হচ্ছে। তিনি বলেন যে, ডনব্যাস অঞ্চলে নেয়া কর্মতত্পরতার যারা বিরোধিতা করেছেন তারা এমন “পরিণতির সম্মুখীন হবেন যা তারা কখনো দেখেননি”।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেন্সকি বলেন যে, রাশিয়ার বাহিনী ইউক্রেনের সামরিক পরিকাঠামো ও সীমান্তরক্ষী বাহিনীর উপর হামলা চালিয়েছে। তিনি বলেন যে তার সরকার দেশব্যাপী সামরিক আইন জারি করছে। একই সময়ে তিনি দেশের মানুষকে শান্ত থাকার ও ঘরে অবস্থান করার আহ্বান জানান।
ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে যে, বৃহস্পতিবার সকালে দেশটির পূর্বে অবস্থিত ইউক্রেনের বাহিনীর উপর রাশিয়া গোলাবর্ষণ আরম্ভ করে এবং ইউক্রেনের একাধিক শহরের বিমানবন্দরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। ইউক্রেনের সীমান্তরক্ষী বাহিনী রাশিয়া ও বেলারুশ থেকে কামান দিয়ে গোলাবর্ষণের খবর জানিয়েছে।
ইউক্রেনের সীমান্তরক্ষীরা আরও জানায় যে, দেশটির দক্ষিণে রাশিয়ার দখলে থাকা ক্রাইমিয়ার সীমান্তের কাছে, তিনজন সীমান্তরক্ষী নিহত ও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন যে, ইউক্রেনের জনগণ “রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর দ্বারা একটি অপ্ররোচিত এবং অন্যায় আক্রমণের” শিকার হয়েছেন।
এক বিবৃতিতে বাইডেন বলেন, “প্রেসিডেন্ট পুতিন একটি পূর্বপরিকল্পিত যুদ্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যা কিনা সর্বনাশা মৃত্যু ও মানুষের জন্য ভোগান্তি ডেকে আনবে।” বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, “এই আক্রমণের ফলে যে মৃত্যু ও ধ্বংসযজ্ঞ হবে তার জন্য একমাত্র রাশিয়া দায়ী, এবং যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র ও সহযোগীরা ঐক্যবদ্ধ ও সঙ্কল্পবদ্ধভাবে সেটির জবাব দিবে। বিশ্ব রাশিয়াকে জবাবদিহীতার সম্মুখীন করবে।”
বাইডেন জানান যে তিনি পরিস্থিতিটি নিয়ে টেলিফোনে জেলেন্সকির সাথে আলাপ করেছেন, যিনি তাকে অনুরোধ করেছেন যাতে বাইডেন “বিশ্ব নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান যে তারা যেন প্রেসিডেন্ট পুতিনের নির্লজ্জ আক্রমণের বিরুদ্ধে সোচ্চার হন এবং ইউক্রেনের মানুষের পাশে দাড়ান।”
বৃহস্পতিবার সকালে জি-সেভেন নেতাদের সাথে আলাপের পর বাইডেন বলেন যে, যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য মিত্ররা রাশিয়ার উপর গুরুতর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে। বৃহস্পতিবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতাদেরও নতুন দফায় নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়ে আলোচনার কথা রয়েছে।