অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

ক্রিকেট ব্যাট তৈরির গ্রাম বিন্না


বিন্না গ্রামে ক্রিকেটের ব্যাট তৈরির কেজ চলছে। (ছবি- বাংলাদেশ প্রতিদিন)
বিন্না গ্রামে ক্রিকেটের ব্যাট তৈরির কেজ চলছে। (ছবি- বাংলাদেশ প্রতিদিন)

পিরোজপুর জেলার নেছারাবাদ উপজেলার বিন্না গ্রামটি বাংলাদেশে এখন পরিচিত ক্রিকেটের ব্যাট তৈরির কারণে। দেশীয় ব্যাটের ৭০ শতাংশ এখন তৈরি হয় বিন্না ও আশপাশের ১৫টি গ্রামে। স্থানীয়রা জানান, ব্যাট তৈরি করে ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছে পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলা। সারাদেশ থেকে পাইকাররা আসেন এখানে ব্যাট কিনতে। অনেকে অর্ডার দেন ফোনে। নতুন মাত্রা পেয়েছে গ্রামটি।

স্থানীয় সাংবাদিক তানভীর আহমেদ জানান, বিন্না গ্রামটির অবস্থান পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলা সদরের বলদিয়া ইউনিয়নের বেলুয়া নদীর পূর্বপাড়ে। ৩ যুগ ধরে এখানে তৈরি হয়ে আসছে ক্রিকেট ব্যাট। বর্তমানে এখানে তৈরি করা ব্যাট বিশ্বমান বজায় রাখছে। কিন্তুু বিক্রি হয় শুধুমাত্র দেশিয় বাজারে। সরকার সহায়তা করলে হয়তো এই গ্রামের ব্যাট বিক্রি হতে পারে বিশ্ব বাজারে।

স্থানীয়রা জানান, ব্যাট তৈরির জন্য আমড়া, কদম, গাউয়া, নিমশিশু, তুলা, ডুমুর আর ছাতিম গাছ ব্যবহার হয়। এই গাছগুলো স্থানীয় কৃষক পরিবার থেকে কেনা হয়। কারিগররা সাতটি স্তরের প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ব্যাট তৈরি করেন। প্রথমে একটি গাছ সমিলে নিয়ে মূল অংশ তৈরি করা হয়। তারপর তাতে লাগানো হয় হাতল। এরপর ব্যাটের কাঠামো তৈরি হয় ফিনিশিং এর মাধ্যমে । এই ফিনিশিং প্রক্রিয়া আধুনিক না হওয়ার কারণে সময় লাগে একটু বেশি। ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে একটি ব্যাট তৈরিতে ১৫-২০ দিন সময় লাগে। এসব ব্যাটের জন্য স্টিকার কেনা হয় ঢাকা থেকে। প্রতি সেট স্টিকারে খরচ ১৫ টাকা। নেছারাবাদে তৈরি ব্যাট স্টিকার লাগিয়ে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন স্থানে বিক্রির জন্য পাঠানো হয়।

বাংলাদেশে দুই ধরনের ক্রিকেট ব্যাট বব্যবহৃত হয়। আন্তর্জাতিক মানের ব্যাট আসে পাকিস্তান থেকে। দেশীয় ব্যাটের বড় অংশ উৎপাদিত হয় পিরোজপুরে। এর বাইরে যশোর ও ঝিনাইদহে ব্যাট তৈরি হয়। কারিগর বিমল চন্দ্র বলেন, "সরকার চাইলে এবং সহায়তা করলে আমরা আন্তর্জাতিক মানের ব্যাট তৈরি করতে পারবো। যা দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানী করা যাবে।"

বিন্না গ্রামের লোকজন জানান, প্রথমে ব্যাট তৈরি এই গ্রাম থেকে শুরু হলেও পরে আশপাশের ইন্দেরহাট, ঝিলবাড়ি, চামি, ডুবি, কুড়িবুনিয়া, পঞ্চবুটি, আউরবুনিয়াসহ প্রায় ১৫টি গ্রামে তৈরি হচ্ছে। করোনার পর উৎপাদন কমেছে। তবে ঘুরে দাড়াঁনোর চেষ্টা করছে সবাই।

বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক)-এর ভারপ্রাপ্ত জেলা উপব্যবস্থাপক মিলটন চন্দ্র বৈরাগী জানান, নেছারাবাদ উপজেলায় ৫০টি কারখানায় ২ হাজার ৫০০ শ্রমিক ব্যাট তৈরিতে কাজ করে। যাদের হাত ধরে দেশের ক্রিকেট ব্যাটের চাহিদার ৭০ ভাগ পূরণ হয়।

XS
SM
MD
LG