বেইজিং — পরিবারের রাজনৈতিক ভিন্নমত থাকায় একজন বেলারুশিয়ান ক্রস-কান্ট্রি স্কিয়ার প্রতিযোগিতা থেকে নিষিদ্ধ হবার পর, কর্তৃপক্ষের প্রতিশোধের ভয়ে তার পরিবারসহ দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি এবং তার বাবা ।
দারিয়া ডলিডোভিচ এবং তার পরিবার এখন পোল্যান্ডে রয়েছেন, যেখানে তিনি প্রশিক্ষণ চালিয়ে যাওয়ার আশা করছেন। দারিয়ার বাবা এবং সাত বারের অলিম্পিয়ান ক্রস-কান্ট্রি স্কিয়ার সের্গেই ডলিডোভিচ, যিনি বর্তমানে দারিয়ার কোচ, মঙ্গলবার তার মেয়ের সাথে ভিডিও কলের মাধ্যমে এক সাক্ষাত্কারে রয়টার্সকে এসব কথা বলেন।
রয়টার্স গত মাসে রিপোর্ট করেছে, বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কোর অধীনে ২০২০ সালের পুনঃনির্বাচনের সময় রাস্তার এক প্রতিবাদ বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করেছিল দারিয়ার বাবা সের্গেই। সেই কারণে ১৭ বছর বয়সী দারিয়াকে প্রতিযোগিতা থেকে নিষিদ্ধ করা হয় বলে তিনি এবং তার মেয়ে মনে করেন। ওই নির্বাচনে জালিয়াতি এবং ভোট কারচুপি হয়েছে বলে বিরোধীরা অভিযোগ করেন। লুকাশেঙ্কো অবশ্য ভোট কারচুপির কথা অস্বীকার করেছেন।
সের্গেই বলেন, “দারিয়ার প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে”। “আমি বেলারুশে তার ক্যারিয়ার চালিয়ে যাওয়ার আর কোনও সম্ভাবনা দেখছি না”।
তিনি বলেন, “আমি জানি আমাদেরকে বিক্ষোভ করার এবং (বিরোধী) স্লোগান দেওয়ার জন্য অভিযোগে অভিযুক্ত করা হবে, এরপর কারাগারে পাঠানো হবে”।
“তিন মাস আগেও, আমি কল্পনা করতে পারিনি, এমনকি দুঃস্বপ্নেও ভাবিনি, আমাকে আমার দেশ ছেড়ে চলে যেতে হবে”।
দারিয়া, দেশের সবচেয়ে প্রতিশ্রুতিশীল জুনিয়র ক্রস-কান্ট্রি স্কিয়ারদের একজন। গত মাসে তিনি বলেছিলেন, বেলারুশ স্কি ইউনিয়ন তার এফআইএস কোড নিষ্ক্রিয় করেছে। এফআইএস কোড হল আন্তর্জাতিক স্কি ফেডারেশন (এফআইএস) পরিচালিত যে কোনও প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য ক্রীড়াবিদদের জন্য প্রয়োজনীয় একটি পৃথক সনাক্তকারী নম্বর।
দারিয়া ডলিডোভিচের এই বছর মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে পাশ করার কথা ছিল, তবে তিনি কীভাবে পোল্যান্ডে পড়াশোনা করবেন, তা এখনো স্পষ্ট নয়।
দারিয়া জানায়, “আমি বেলারুশে স্কুল শেষ করার পরিকল্পনা করেছিলাম, কিন্তু আমার বাবা-মা বললো, আমরা এখান থেকে চলে যাচ্ছি”। “অবশ্যই আমার মন খারাপ। আর মাত্র কয়েক মাস পরেই আমার স্কুল শেষ হয়ে যেতো”।
তবে ডলিডোভিচ বলেন, তিনি তার অলিম্পিক স্বপ্নকে বাঁচিয়ে রাখার আশায় স্কিইং চালিয়ে যেতে আগ্রহী।
বিরোধী মতামত প্রকাশ করার জন্য এবং ২০২০ সালে লুকাশেঙ্কোর পুনর্নির্বাচন নিয়ে শুরু হওয়া বিক্ষোভে যোগ দেওয়ায় এর আগে বেশ কয়েকজন নামকরা বেলারুশিয়ান ক্রীড়াবিদকে জেলে পাঠানো হয়েছে বা জাতীয় দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।