উত্তর আয়ারল্যান্ডের শহর লন্ডনডেরির মানুষ আধুনিক ব্রিটেনের ইতিহাসের অন্যতম একটি অন্ধকারাচ্ছন্ন দিন স্মরণ করল রবিবার (৩০ জানুয়ারি)। ৫০ বছর আগে ব্রিটিশ সেনারা যেখানে কোনো উস্কানি ছাড়াই নাগরিক অধিকারের জন্য বিক্ষোভকারী নিরস্ত্র ১৩ জনকে হত্যা করেছিল।
"ব্লাডি সানডে" বার্ষিকী এমন সময় উদযাপিত হলো, যখন ব্রেক্সিটের কারণে উত্তর আয়ারল্যান্ডের শান্তি বিপর্যস্ত বা অস্থিতিশীল এবং নিহতদের পরিবার-পরিজন হত্যাকাণ্ডে জড়িত সেনারা কখনো বিচারের মুখোমুখি হবে কি না তা নিয়ে হতাশাগ্রস্ত।
১৯৭২ সালের ৩০ জানুয়ারি চার্লি ন্যাশ তার ১৯ বছর বয়সী চাচাতো ভাই উইলিয়াম ন্যাশকে ব্রিটিশ প্যারাসুট রেজিমেন্টের সেনাদের হাতে নিহত হওয়ার দৃশ্য দেখেছিলেন। সেদিন প্যারাসুট রেজিমেন্টের সেনারা লন্ডনডেরিতে বিক্ষোভকারীদের ওপর দ্রুতগতির ১০০-র বেশি রাউন্ড গুলি ছুঁড়েছিল। এই বিক্ষোভ আইরিশপন্থী জাতীয়তাবাদীদের কাছে "ডেরি" নামে পরিচিত।
বর্তমানে ৭৩ বছর বয়সী ন্যাশ বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানান, "আমরা ভেবেছিলাম দাঙ্গা হতে পারে। কিন্তু তা দাঙ্গা ছিল না। যা ঘটেছিল তা ছিল অকল্পনীয়। প্রথমে আমরা ভেবেছিলাম ছোঁড়া গুলিগুলো হয়তোবা রাবার বুলেট"।
কিন্তু তার সরকার যে আইন প্রণয়ন করেছে, তা সমালোচকদের ভাষায় উত্তর আয়ারল্যান্ডের তিন দশকের সাম্প্রদায়িক অস্থিরতার সময় নিরাপত্তা বাহিনীর হত্যাকাণ্ডসহ সব হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী সকলের প্রতি সাধারণ ক্ষমার সামিল।
প্যারাট্রুপার বাহিনী রক্তাক্ত সেই রবিবারে সরু রাস্তা ও খোলা জলাভূমি লক্ষ্য করে গুলি চালালে ১৩ জন প্রতিবাদকারী নিহত হয়েছিলেন।
নিহতদের আত্মীয়-স্বজনসহ কয়েক শ লোক ১৯৭২ সালের মার্চের স্মৃতিচারণ করেন এবং সকালের শেষ ভাগে প্রার্থনার আগে ধূসর আকাশের নিচে নীরবে হেঁটে যান।
প্রাক্তন একজন বিচারক ও যুক্তরাজ্যের হাউস অব লর্ডসের একজন সদস্য মার্ক সেভিল শনিবার বিবিসি রেডিওকে বলেন, "তদন্তে আমরা উপনীত হয়েছি যে, ঐ গুলি চালানো ছিল অসঙ্গত ও অযৌক্তিক"।