বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রনের সংক্রমণ প্রতিরোধে ক্লিনিক্যাল গাইডলাইন চূড়ান্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। বাংলাদেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে বুধবার (২৬ জানুয়ারি) দুপুরে ভার্চ্যুয়াল বুলেটিনে এসে অধিদপ্তরের মুখপাত্র ডা. নাজমুল ইসলাম এ তথ্য জানান।
ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণের বিষয়ে সবাইকে সতর্ক করে নাজমুল ইসলাম বলেন, “করোনার নতুন ধরন ওমিক্রনের কারণেই ক্রমাগত সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। সংক্রমণ প্রতিরোধে ক্লিনিক্যাল গাইডলাইন তৈরিও চূড়ান্ত হয়ে গেছে। স্বাস্থ্যসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে ইতিমধ্যে আমরা পাঠিয়ে দিয়েছি।
তিনি বলেন, “ওমিক্রনের যে উপসর্গ আছে সে উপসর্গগুলো এতে (ক্লিনিক্যাল গাইডলাইন) যোগ করা হয়েছে। এর বাইরে অন্য কোনো উপসর্গ রয়েছে কি না সেটি খুঁজে দেখা হচ্ছে। তবে যাই হোক না কেন, রোগ নিয়ন্ত্রণের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
স্বাস্থ্যবিধি মানার ওপর জোর দিয়ে নাজমুল ইসলাম বলেন, “করোনা প্রতিরোধে টিকা নেওয়া, সঠিক নিয়মে নাক-মুখ ঢেকে মাস্ক ব্যবহার করা, নিয়মিত হাত ধোয়া, হ্যান্ড স্যানিটাইজ করা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে প্রাত্যহিক কাজ করা সম্ভব হলে অতিমারি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হবে। মাস্ক আমার, সুরক্ষা সবার। তিনি বলেন, “দেশবাসীর কাছে আবেদন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়ে কোনো অবস্থাতেই শিথিলতা দেখানো যাবে না। রোগীর সংখ্যা বাড়লে চাপ বাড়বে। আমাদের যে সীমিত সম্পদ আছে, তার সর্বোত্তম ব্যবহার করা কঠিন হয়ে পড়বে। আমরা যদি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলি তাহলে এই অতিমারি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।”
নাজমুল ইসলাম আরও বলেন, “গতকাল পর্যন্ত ১ কোটি ৩৬ লাখের বেশি শিক্ষার্থীকে প্রথম ডোজের টিকা দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় ডোজের টিকা দেওয়া হয়েছে ১৭ লাখ ৪৬ হাজার শিক্ষার্থীকে। স্কুলগুলোতে টিকাপ্রাপ্তি নিয়ে সমস্যা নেই। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কাছে পর্যাপ্ত টিকা মজুত আছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর চাহিদা অনুযায়ী টিকা সরবরাহের প্রস্তুতি ও সক্ষমতা আমাদের আছে।”
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এই বুলেটিনে জানানো হয়, সরবরাহ লাইনের মাধ্যমে হাসপাতালগুলোতে অক্সিজেন সরবরাহ চলছে। ১২৯টি সরবরাহ লাইন আছে। এর পাশাপাশি ২৯ হাজারের বেশি অক্সিজেন সিলিন্ডার, ২ হাজারের বেশি ক্যানোলা এবং ২ হাজার তিন শর বেশি অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটর বিভিন্ন হাসপাতালে সরবরাহ করা হয়েছে। এর বাইরেও পর্যাপ্ত মজুত আছে।
টিকা কার্যক্রম অব্যাহত আছে উল্লেখ করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, গতকাল পর্যন্ত ৯ কোটি ৫৪ লাখের বেশি মানুষ প্রথম ডোজের টিকা নিয়েছেন। দ্বিতীয় ডোজের টিকা নিয়েছেন ৫ কোটি ৫৭ লাখের বেশি। আর বুস্টার ডোজের টিকা নিয়েছেন ১২ লাখ ৬৪ হাজারের বেশি মানুষ।