যুক্তরাষ্ট্র সরকার শুক্রবার (২১ জানুয়ারি) বলেছে, দেশটি থেকে চারটি চীনা বিমান সংস্থার চীনগামী ৪৪টি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। কোভিড–১৯ বিধিনিষেধের কারণে চীন সরকার যুক্তরাষ্ট্রের বিমান সংস্থার কয়েকটি চীনগামী ফ্লাইট বাতিলের জবাবে যুক্তরাষ্ট্র সরকার এই স্বিদ্ধান্ত নেয়।
যুক্তরাষ্ট্রের পরিবহন বিভাগ জানিয়েছে, এই নিষেধাজ্ঞা ৩০ জানুয়ারী জিয়ামেন এয়ারলাইন্সের লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে জিয়ামেনগামী ফ্লাইট দিয়ে শুরু হবে এবং ২৯ মার্চ পর্যন্ত চলবে।
এই সিদ্ধান্তের ফলে জিয়ামেন, এয়ার চায়না, চায়না সাউদার্ন এয়ারলাইন্স এবং চায়না ইস্টার্ন এয়ারলাইন্সের কিছু ফ্লাইট বাতিল হবে।
কয়েকজন যাত্রী কোভিড-১৯ পরীক্ষায় পজিটিভ হওয়ার পর ৩১ ডিসেম্বর থেকে চীনা কর্তৃপক্ষ ইউনাইটেড এয়ারলাইন্সের ২০টি, আমেরিকান এয়ারলাইন্সের ১০টি এবং ডেলটা এয়ারলাইন্সের ১৪টি ফ্লাইট বাতিল করে।
মঙ্গলবার পরিবহন বিভাগ জানায়, চীন সরকার নতুন করে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরও কিছু ফ্লাইট বাতিল করেছে।
ওয়াশিংটনে চীনা দুতাবাসের মুখপাত্র লিউ পেঙ্গু শুক্রবার বলেন, চীনে প্রবেশে আন্তর্জাতিক বিমানের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা দেশি–বিদেশি সকল বিমান সংস্থার ওপর সমান এবং নিরেপেক্ষভাবে প্রয়োগ করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপকে “অত্যন্ত অযৌক্তিক” দাবি করে তিনি বলেছেন, “আমরা যুক্তরাষ্ট্রের সরকারকে অনুরোধ করবো তারা যেন চীনা বিমান সংস্থার যাত্রীবাহী ফ্লাইটগুলোকে স্বাভাবিকভাবে চলাচল করতে দেয়”।
এয়ারলাইন্স ফর আমেরিকা সরকারের এই স্বিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে।
পরিবহন বিভাগ আরও জানিয়েছে, ফ্রান্স ও জার্মানিও চীনের ফ্লাইটের ব্যাপারে একই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরিবহন বিভাগের ভাষ্যমতে, “চীনের ফ্লাইট বাতিলের সিদ্ধান্ত জনস্বার্থের পরিপন্থী এবং জবাবে অনুরূপ স্বিদ্ধান্তই প্রাপ্য তাদের”।
এতে আরও বলা হয়, “যুক্তরাষ্ট্রের বিমানসংস্থার প্রতি চীনের এই একতরফা আচরণ সম্পূর্ণ অসংগতিপুর্ণ”।
উল্লেখ্য, চীন দেশটির নিজস্ব বিমান সংস্থারও একাধিক ফ্লাইট বাতিল করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পরিবহন বিভাগ জানিয়েছে, চীন তাদের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে রাজি হলে তারাও পুনর্বিবেচনা করে দেখবে। পরিবহন বিভাগ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছে, “চীন যদি আর কোনো ফ্লাইট বাতিল করে, আমাদেরও একই ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার রয়েছে”।
চীনের সিভিল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অব চায়না গত সেপ্টেম্বরে জানায়, প্রতি সপ্তাহে গড়ে ২০০টি ফ্লাইট বাতিল করছে দেশটি, যা অতিমারির আগের সংখ্যার দুই শতাংশ।
ডিসেম্বরে ওমিক্রনের প্রকোপ বাড়তে শুরু করলে যুক্তরাষ্ট্র থেকে চীনগামী বিমানের সংখ্যা হ্রাস পেতে শুরু করে।
অতিমারির শুরু থেকেই দুই দেশের মধ্যে চলাচলকারী বিমান নিয়ে বেইজিং এবং ওয়াশিংটনের দ্বন্দ্ব। গত আগস্টে যুক্তরাষ্ট্রের পরিবহন বিভাগ চীন থেকে আগত বিমানের জন্যে ধারণ ক্ষমতার ৪০ শতাংশ যাত্রির নীতিমালা চালু করে। এর মাত্র এক মাস আগেই চীনও একই ধরনের নীতিমালা চালু করেছিল।
সাম্প্রতিক এই ফ্লাইট বাতিলের আগ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের বিমান সংস্থাগুলো সপ্তাহে মাত্র ২০টি ফ্লাইট পরিচালনা করছিল। অতিমারির আগে এই সংখ্যা ছিল ১০০।