খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব 'বড়দিন'কে ঘিরে রাজধানীসহ বাংলাদেশ জুড়ে থাকছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
পুলিশসহ সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদের নজরদারিতে থাকছে ঢাকা। শুধু তাই নয়, যে কোনো গুজব ও অপপ্রচার প্রতিহত করতে সারাদেশেই কঠোর সাইবার মনিটরিং করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিট।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সূত্র জানায়, রাজধানীর সব গির্জায় ইতোমধ্যে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বড়দিনের উৎসবকে কেন্দ্র করে কোনো গোষ্ঠী যাতে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্য পুরো রাজধানী জুড়েই থাকবে র্যাব-পুলিশের কঠোর নজরদারি। গির্জাগুলোর বাইরে ও ভেতরে পোশাকে, সাদা পোশাকে নজরদারিতে থাকবে র্যাব-পুলিশসহ গোয়েন্দা সদস্যরা।
এদিকে সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক শুধুমাত্র খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের গির্জায় প্রবেশ নিশ্চিতে অনুরোধ জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পাশাপাশি করোনা ভাইরাস রোধে সরকারি স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে পরিপালনের জন্য সবাইকে অনুরোধ জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, খ্রিষ্টানদের ধর্মীয় উৎসব যাতে সুন্দর ভাবে পালিত হয়, সেই লক্ষ্যে এবছর সব গির্জায় নিরাপত্তা জোরদারের পরিকল্পনা নিয়েছে পুলিশ। সে অনুযায়ী ইতোমধ্যে পুলিশ কাজও শুরু করেছে। গির্জাগুলোর বাইরে পোশাকে, সাদা পোশাকে নিয়োজিত থাকবে ডিএমপির গোয়েন্দা সদস্যরা। সেই সঙ্গে অনুষ্ঠানস্থলের আশপাশে ইভটিজিং প্রতিরোধে বিশেষ নজরদারি রাখা হবে। এজন্য পুলিশের বিশেষ টিম দায়িত্ব পালন করবে। গির্জা এলাকায় পুলিশি নিরাপত্তার পাশাপাশি থাকবে ফায়ার টেন্ডার ও অ্যাম্বুলেন্স ব্যবস্থা।
সেই সঙ্গে রাজধানীতে তিন স্তরের নিরাপত্তার পাশাপশি সড়কগুলোতে র্যাবের টহল ও পেট্রোলিং থাকবে। সার্বিকভাবে চলবে র্যাবের সাইবার মনিটরিং। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যাতে কেউ কোনো প্রকার গুজব ছড়াতে না পারে সে বিষয়ে কঠোর মনিটরিং থাকবে।
এ বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেন, "বড়দিনের উৎসবকে কেন্দ্র করে গির্জাগুলোতে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে। অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশের জন্য সবাইকে আর্চওয়ে ভেতর দিয়ে ও তল্লাশির মাধ্যমে যেতে হবে। খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের বাইরের কেউ যাতে গির্জায় ঢুকে কোনো বিশৃঙ্খলা ঘটাতে না পারে সেজন্য খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী শনাক্তের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নিশ্চিত করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।"
তিনি বলেন, "সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গির্জাগুলোর বাইরে পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা পুলিশ সদস্যরাও নিয়োজিত থাকবে।"
সাইবার পেট্রলিং প্রসঙ্গে ডিএমপি কমিশনার বলেন, "সাধারণত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কোনো ধর্মীয় অনুষ্ঠান থাকলে একটি গ্রুপ নানাবিধ অপপ্রচার চালায়, বিশৃঙ্খলা তৈরির চেষ্টা করে। এসব এড়াতে সাইবার পেট্রলিং বাড়ানো হয়েছে। ইভটিজিং প্রতিরোধে পুলিশের বিশেষ টিম সাদা পোশাকে নজরদারি করবে।"
গোযেন্দার সূত্র জানা যায়, ধর্মীয় অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে কেউ যাতে নাশকতার চেষ্টা করতে না পারে সেজন্য পুলিশের গোয়েযেন্দা বিভাগ, কাউন্টার টেরোরিজমের (সিটিটিসি) সদস্যরা সতর্কাবস্থায় নিয়োজিত থাকবে। নিরাপত্তা পরিকল্পনায় - গির্জা ও তার আশপাশের এলাকায় সন্দেহজনক কোনো ব্যক্তি বা বস্তু চোখে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশকে অবহিত করতে বলা হয়েছে৷ প্রয়োজনে জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯-এর মাধ্যমে অবগত করতে বলা হয়েছে।