অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

জলবায়ু রক্ষার দাবীতে সারা বিশ্বে ১৫ লক্ষ স্কুল শিক্ষার্থীর ক্লাস বর্জন


প্রতিটি প্রজন্মের মধ্যেই দেখা যায় কোনো না কোনো সামাজিক পরিবর্তনের জন্যে বিপ্লব হয়; আন্দোলন হয়। আর তাতে নেতৃত্ব দেয় তরুন সমাজ।

প্রতিটি প্রজন্মের মধ্যেই দেখা যায় কোনো না কোনো সামাজিক পরিবর্তনের জন্যে বিপ্লব হয়; আন্দোলন হয়। আর তাতে নেতৃত্ব দেয় তরুন সমাজ। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রসহ গোটা বিশ্বের স্কুল শিক্ষার্থীরা শুক্রবারের ক্লাস বর্জন করে, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবীতে। বিশ্ব নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষন করাই ছিল তাদের ক্লাস বর্জনের লক্ষ্য। গত শুক্রবার গোটা বিশ্বের স্কুল শিক্ষার্থীদের ক্লাস বর্জন বেশ আলোচিত ও সমন্বিত প্রয়াস ছিল।

১৯৬০ এর দশকে যুক্তরাষ্ট্রের তরুণ সমাজ সরকারী স্থানসমুহ পৃথক করার আন্দলন করেছিল; ১৯৮০র দশকে দক্ষিন আফ্রিকার তরুণ সমাজ শিক্ষাঙ্গনে আন্দোলন করেছিল যা পরবর্তীতে জাতিগত বৈষম্যের বিরুদ্ধে বিপ্লবে পরিণত হয়; ১৯৮৯ সালে বেইজিং এ গনতন্ত্রের পক্ষে আন্দলন হয়, তাও তরুন সমাজের নেতৃত্বে। ঐসব আন্দলেন সবগুলো যে স্বার্থক ও সফল হয়েছিল তা নয়। কিছু সফল হয়; কিছু ব্যার্থ হয়।

১৫ই মার্চ সারা বিশ্বের স্কুল শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে। এটি ছিল রেকর্ড ভঙ্গ করার মতো একটি ঘটনা। গনমাধ্যমের খবরে জানা যায় বিশ্বব্যাপী লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থী রাস্তায় নামে। একশোটিরও বেশী দেশের ১৫ লক্ষ শিক্ষার্থী সেদিন রাজপথে নামে। আলিসা ওয়েসম্যান তাদের একজন।

“এখন আর তাকিয়ে দেখার সময় নেই। কাজে নামার সময় এখন। আমরাই সেই প্রজন্ম এবং আমরাই এই আন্তর্জাতিক প্রয়াসের নেতৃত্ব দেবো"।

জর্জ মেসন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক প্যাট্রিশিয়া মল্ডেন বলেন এটি আশ্চর্যজনক কোনো ঘটনা না- কারন তরুন সমাজ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সম্পর্কে সচেতন ও উদ্বিগ্ন। “এটি এমন একটি বিষয় যা তরুনরা বয়স্কদের চেয়ে কম বোঝে না। তারা বিষয়টির গভীরে যায় এবং ভবিষ্যতের জন্য উদ্বিগ্ন হয়েই তারা তার সমাধানের পথ খোঁজে। আর তাদের জন্যে সামাজিক মাধ্যম হয়ে উঠেছে শাপে বর। এতে করে তারা নিজেদেরকে সহজে সংগঠিত করতে পারে”।

ওয়াশিংটনে গত শুক্রবারের সমাবেশের এক তরুণ এমা ও ড্রিসকলের মন্তব্য, “তরুন হিসাবে এটি আমাদের দায়িত্ব। আমরা তরুণ বলে, অভিজ্ঞতা নেই বলে যে বসে থাকবো তা নয়; বিশ্বকে বদলে দিতে আমরাও যে ভূমিকা রাখতে পারি তার প্রমান দিতে চাই আমরা”।

জলবায়ুর জন্য এটিই শিক্ষার্থীদের প্রথমবার রাজপথে নামার ঘটনা। মার্চ ফর আওয়ার লাইভস আন্দোলনের দ্বারা অনুপ্রানিত হয়ে এবার এই আন্দোলনে নেমেছে তরুণরা। মার্চ ফর আওয়ার লাইভস ছিল আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রনের দাবীতে করা আন্দোলন। গত বছর ফ্লরিডার পার্কল্যান্ডের একটি হাইস্কুলে গুলীর ঘটনায় ১৭ জন নিহত হবার পর ঐ আন্দোলন শুরু হয়।

please wait

No media source currently available

0:00 0:04:28 0:00

প্যাট্রিশিয়া সে প্রসঙ্গে কথা বলেন, “পার্কল্যান্ডের শিক্ষার্থীরা দারুন একটি কাজ করেছে; তারা এমনভাবে আন্দোলনটিকে সংগঠিত করেছে যা অন্যদেরকে অনুপ্রানিত করেছে”।

জলবায়ু পরিবর্তন রোধের দাবীতে করা এই আন্দোলন কতোটা সফল হবে তা বলার সময় এখনো হয়নি। বিশ্লেষকরা বলছেন বলা কঠিন- তবে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে সমন্বয় করার একটা দারুন দক্ষতা আছে- তাছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কিছু প্রখ্যাত রাজনীতিক এতে সমর্থন দিয়েছেন। ডেমোক্রেটিক কংগ্রেসওম্যান ইলহান ওমার তাদের একজন- তিনি পরিচ্ছন্ন জ্বালানীর পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। ওয়াশিংটনে দেয়া তার বক্তব্য একথাই ফুটে ওঠে।

স6
স6

“আজ যেসব তরুণ এখানে এসেছেন তাদেরকে ধন্যবাদ জানাই- ভবিষ্যতের জন্য চিন্তা করেই আজ এখানে আপনারা সবাই এসেছেন। এটা খুব চমৎকার ঘটনা”। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিলারী ক্লিন্টন, হলিউড তারকা লিওনার্দো ডি ক্যাপ্রিও এতে সমর্থন জানিয়েছেন।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে স্কুল শিক্ষার্থী যে তরুন তরুনীরা, যাদের বেশিরভাগই এখনো ভোটার হয়নি; তাদের করা এই আন্দোলন জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে বিশ্ব রাজনীতিতে কতোটা প্রভাব ফেলবে।

XS
SM
MD
LG