করোনা মহামারী বিশ্বকে টিকা নেয়া এবং টিকা না নেয়া জনগোষ্ঠী, এ দুটি ভাগে বিভক্ত করে ফেলেছে। এমন পরিস্থিতিতে বিশ্বের ২০টি ধনী দেশের নেতারা এই সপ্তাহের শেষের দিকে এই বিভাজনটি কীভাবে মোকাবেলা করা যায় তা নিয়ে আলোচনা করতে মিলিত হবেন।
২০১৯ সালের পর জি-২০ নেতা্রা প্রথম সশরীরে এই সম্মেলনে উপস্থিত হতে যাচ্ছেন এবং মহামারী নিয়ে উদ্বেগের কারণে এ বিষয়টি কম গুরুত্ব পাবে বলে মনে হচ্ছে। বিশ্বে টিকা সঠিকভাবে বিতরণ হচ্ছে কিনা সে বিষয়টি আলোচনার শীর্ষে রয়েছে। শনিবার রোমে শুরু হচ্ছে এই শীর্ষ সম্মেলন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন দাবি করেছেন যে যুক্তরাষ্ট্র, বিশ্বের সবচেয়ে ধনী দেশ ছাড়াও এখন "বিশ্বের ভ্যাকসিন ভাণ্ডার"। যে সংখ্যক টিকা অনুদান হিসেবে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র তার মধ্যে থেকে ইতিমধ্যে ১১০ কোটি টিকা দেয়া হয়েছে যা অন্যান্য দেশের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি।
তবে স্বাস্থ্য প্রবক্তারা বলছেন এটি যথেষ্ট নয়। প্রতিশ্রুত ভ্যাকসিনগুলির একটি ভগ্নাংশ সরবরাহ করা হয়েছে এবং বিজ্ঞান বিশ্লেষণকারী সংস্থা এয়ারফিনিটির একটি নতুন গবেষণায় দেখা গেছে যে জি-২০ দেশগুলি সাব-সাহারান আফ্রিকার দেশগুলির তুলনায় মাথাপিছু ১৫ গুণ বেশি কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন ডোজ পেয়েছে।
বিশ্ব নেতারা ইঙ্গিত দিয়েছেন যে তারা একসাথে হয়ে আরও কিছু করতে ইচ্ছুক। সেপ্টেম্বরে, জি-২০ মন্ত্রীরা সর্বসম্মতিক্রমে রোম চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। ঐ চুক্তি ২০২১ সালের মধ্যে বিশ্ব জনসংখ্যার ৪০ শতাংশকে টিকা দেয়ার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার লক্ষ্যকে পুনরায় নিশ্চিত করে।
সমালোচকরা ইঙ্গিত দিয়েছেন যে নথিটি কোনও নির্দিষ্ট প্রতিশ্রুতি দেয়নি।সক্রিয় কর্মী এবং সাহায্য গোষ্ঠীগুলি জি-২০ দেশগুলিকে বাস্তব প্রতিশ্রুতি দেওয়া, বিতরণের সময়সূচীকে ত্বরান্বিত করা এবং আরও উদার হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে। সেইসঙ্গে শুধুমাত্র ভ্যাকসিন দিয়ে নয়, ভ্যাকসিন তৈরির পিছনে থাকা প্রযুক্তি এবং এটি পাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম দেয়ার বিষয়ে জোর দিয়েছে।
"বিশ্বের ভ্যাকসিন ভাণ্ডার"
হোয়াইট হাউস বলেছে যে যুক্তরাষ্ট্র ইতিমধ্যে অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় বেশি ভ্যাকসিন দান করছে। বিশ্বজুড়ে যখন অনেক মানুষ এখনো তাদের প্রথম ডোজ পায়নি সেখানে আমেরিকানদের বুস্টার ডোজ নেয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত নিয়ে সমালোচনাকে প্রত্যাখ্যান করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা।
হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব জেন সাকি গত মাসে বলেছিলেন, "আমরা মনে করি যে আমরা উভয়ই করতে পারি এবং এছাড়া আর পথ নেই।সত্যি কথা বলতে আমরা মনে করি বাকি বিশ্বের পদক্ষেপ নিতে হবে এবং আরও কিছু করতে হবে।"