পদত্যাগ করেছেন আর্মেনিয়ার প্রেসিডেন্ট আর্মেন সার্কিসিয়ান। রবিবার (২৩ জানুয়ারি) নিজের পদত্যাগপত্র জমা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, দেশটির সংবিধান তাকে রাষ্ট্রের বিভিন্ন বিষয়ে ক্ষমতা প্রয়োগের পর্যাপ্ত অধিকার প্রদান করেনি।
সার্কিসিয়ান ২০১৮ সাল থেকে দেশটির প্রেসিডেন্টর দায়িত্ব পালন করছেন।
প্রেসিডেন্ট সার্কিসিয়ান গত বছর সশস্ত্র বাহিনীর প্রধানকে বরখাস্ত করাসহ বেশ কিছু বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনিয়ানের সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে পড়েন।
দেশটিতে প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকা প্রেসিডেন্টর চেয়ে বেশি শক্তিশালী।
প্রেসিডেন্টের সরকারি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে সার্কিসিয়ান বলেছেন, "আমি দীর্ঘদিন ধরেই পদত্যাগের কথা ভাবছিলাম। প্রায় চার বছর সক্রিয়ভাবে কাজ করার পর আমি প্রজাতন্ত্রের প্রেসিডেন্টর পদ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি”।
“প্রশ্ন উঠতে পারে যে, প্রেসিডেন্ট কেন রাজনৈতিক ঘটনাবলিতে প্রভাব বিস্তার করতে ব্যর্থ হলেন যা থেকে বর্তমান জাতীয় সংকট উদ্ভূত হলো। অবধারিতভাবেই উত্তরটা হলো আমাদের সংবিধান। আমাদের কিছু মৌলিক আইনের মধ্যেই আমাদের সমস্যাগুলোর শিকড় লুকিয়ে আছে”।
২০১৫ সালের ডিসেম্বরে গণভোটে আর্মেনিয়া একটি সংসদীয় প্রজাতন্ত্রে রূপান্তরিত হয়, যেখানে প্রেসিডেন্টর ক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করা হয়েছিল।
সার্কিসিয়ান তার বিবৃতিতে সরাসরি কোনো বিশেষ ঘটনা বা বিশেষ সমস্যার উল্লেখ করেননি।
২০২০ সালে আজারবাইজানের সঙ্গে ছয় সপ্তাহের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পরে রাশিয়ার মধ্যস্থতায় আর্মেনিয়া যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। গত নভেম্বরেও একই প্রতিবেশীর সঙ্গে যুদ্ধের পরে রাশিয়ার আহ্বানে অস্ত্রবিরতিতে সম্মত হয় দেশটি।
রাশিয়ার মধ্যস্থতায় ২০২০ সালের চুক্তির অধীনে আজারবাইজান গত শতকের ৯০–এর দশকের প্রখমার্ধে যুদ্ধে যে অঞ্চলটি হারিয়েছিল তার নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধার করে। চুক্তির এই শর্তের কারণে প্রতিনিয়ত বিক্ষোভের মুখে পড়েন আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী পাশিনিয়ান।
আর্মেনিয়া ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে স্বাধীনতা লাভ করে। যদিও ত্রাণ সহযোগিতা এবং বিনিয়োগের জন্য দেশটি অনেকাংশেই রাশিয়ার ওপর নির্ভরশীল। অনেক আর্মেনিয় নাগরিক দেশটির সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি এবং অর্থনীতির ভুল ব্যবস্থাপনার অভিযোগ এনেছেন।