অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

দর্শক ছাড়া অলিম্পিক আয়োজনের সিদ্ধান্ত চীনের


বেইজিং এ কোভিড-১৯ থেকে সুরক্ষার জন্য মাস্ক পরা একজন নারী শীতকালীন অলিম্পিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান পর্যন্ত সময় গণনা করা একটি ঘড়ির পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন।১৫ জানুয়ারী ২০২২।(ছবি-এপি/মার্ক শাইফেলবেইন)
বেইজিং এ কোভিড-১৯ থেকে সুরক্ষার জন্য মাস্ক পরা একজন নারী শীতকালীন অলিম্পিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান পর্যন্ত সময় গণনা করা একটি ঘড়ির পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন।১৫ জানুয়ারী ২০২২।(ছবি-এপি/মার্ক শাইফেলবেইন)

কোভিড-১৯ সংক্রমণ বাড়ায় চীন সোমবার (১৭ জানুয়ারি) দেশটিতে অনুষ্ঠিতব্য শীতকালীন অলিম্পিকের দর্শকদের জন্য টিকিট বিক্রি স্থগিত করেছে বলে জানিয়েছে আয়োজকেরা।

এর আগে গত বছর আয়োজকেরা জানিয়েছিল, চীনের সপ্তাহব্যাপী কোয়ারাইনটিনের কারণে অলিম্পিকে বিদেশি দর্শক না থাকলেও অভ্যন্তরীণ দর্শকেরা সশরীরে খেলা উপভোগ করার সুযোগ পাবেন।

শীতকালীন এই অলিম্পিক শুরু হতে আর মাত্র তিন সপ্তাহ বাকি। এর মধ্যে দেশটিতে সোমবার ২২৩ জন নতুন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে।

বেইজিংয়ের অলিম্পিক আয়োজক কমিটি বলেছে, “দর্শক এবং অলিম্পিক সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে শীতকালীন অলিম্পিক সকলের জন্য উন্মুক্ত না করে অন-সাইট খেলা দেখার ব্যবস্থা করা হচ্ছে”।

যদিও অন-সাইট খেলা দেখতে কীভাবে দর্শক নির্বাচন করা হবে এবং যারা নির্বাচিত হবেন তাদের কোয়ারাইনটিনে থাকতে হবে কি না সে বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলেননি তারা।

২০১৯ সালে করোনাভাইরাস প্রথম চীনেই শনাক্ত হয়। এরপর থেকে দেশটিতে করোনা নিয়ন্ত্রণে কঠোর বিধিনিষেধ চালু হয়। এমনকি যখন শনাক্তের হার কমে যাওয়ায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশ বিধিনিষেধ শিথিল করে তখনো চীন কঠোর স্বাস্থ্যবিধি চালু রাখে।

সম্প্রতি তিয়ানজিন ও গুয়াংডংসহ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় শনাক্তের হার বাড়ায় চাপের মুখে পড়েছে দেশটি। অলিম্পিকে অংশ নিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে চীনে পৌঁছেছেন ক্রীড়াবিদ ও বিভিন্ন কর্মকর্তারা। পৌঁছামাত্রই তাদেরকে সকলের থেকে আলাদা করে বাবলে ঢোকানো হচ্ছে।

সম্প্রতি বেইজিংয়ে ওমিক্রন শনাক্ত হওয়ার পর বহিরাগতদের জন্যে চীনে প্রবেশের বিধিনিষেধ আরেক দফা কড়াকড়ি করেছে দেশটি।

চীনে ঢুকতে এখন ভ্রমণের আগে করোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেট এবং চীনে প্রবেশের পর আরও একটি ফলো-আপ টেস্ট করতে হবে। এছাড়া কর্তৃপক্ষ নাগরিকদের চান্দ্র বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ভ্রমণ না করার আহ্বান জানিয়েছে।

দেশটি কিছু পর্যটন এলাকা বন্ধ করে দিয়েছে।

এছাড়া জনসাধারণকে অন্য দেশ থেকে কিছু কিনতেও নিরুৎসাহিত করেছে দেশটির স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। তারা ধারণা করছে বাইরে থেকে আসা পার্সেল থেকে নতুন করে সংক্রমণ ছড়াতে পারে।

বেইজিংয়ে ওমিক্রনে আক্রান্ত নারী কোথাও ভ্রমণ করেননি কিংবা আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শেও যাননি। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা আশেপাশের প্রায় ১৩ হাজার ব্যক্তির করোনা পরীক্ষা করেছে, এই নারীর আক্রান্ত হওয়ার উৎস খোঁজ করতে।

স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জানিয়েছেন, কানাডা থেকে আসা এক চিঠির খামে জীবাণুর খোঁজ পেয়েছেন তারা।

চীনে প্রাপ্ত ভাইরাসটি ওমিক্রনের সাধারণ ধরনের থেকে আলাদা। এর সঙ্গে গত মাসে উত্তর আমেরিকায় প্রাপ্ত ধরনের মিল রয়েছে।

“আমরা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি যে, নতুন এই সংক্রমণ বাইরে থাকে আসা কোনো বস্তুর মাধ্যমেই ছড়িয়েছে”, বলেছেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা প্যাং জিংহুয়ো।

দেশের বাইরে থেকে কিছু ক্রয় করলে পার্সেলটি ঘরের বাইরে খোলার উপদেশ দিয়েছেন প্যাং।

চীনের দাবি নতুন করে শনাক্ত হওয়া এই ভাইরাসগুলো হিমায়িত খাবার থেকে ছড়িয়েছে। যদিও গত বছর এক প্রতিবেদনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এরকম সম্ভাবনা খুব ক্ষীণ বলে দাবি করেছিল।

যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের মতে জীবাণু বহনকারী কোনো পৃষ্ঠতল বা বস্তু থেকে কোভিড ছড়ানো অসম্ভব নয়। কিন্তু যেকোনো জড় পৃষ্ঠদেশে তিন দিনের মধ্যে ভাইরাসের ৯৯ শতাংশ ধ্বংস হয়ে যাবে।

XS
SM
MD
LG