দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো এই মাসে একটি আঞ্চলিক শীর্ষ সম্মেলনে মিয়ানমার থেকে একজন অরাজনৈতিক প্রতিনিধিকে আমন্ত্রণ জানাবে।সামরিক বাহিনীর যে নেতা ফেব্রুয়ারিতে একটি নির্বাচিত বেসামরিক সরকারের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তাকে নজিরবিহীন ভাবে অগ্রাহ্য করে এই আমন্ত্রণ জানানো হলো।
শুক্রবার রাতে এক জরুরি বৈঠকে দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলির সংগঠন (আসিয়ান)-এর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ঐকমত্য-ভিত্তিক এই গোষ্ঠী যেটি ঐতিহ্যগতভাবে সম্পৃক্ততা ও হস্তক্ষেপ না করার নীতির পক্ষে ছিল, তাদের জন্য এটি একটি বিরল, সাহসী পদক্ষেপ।
সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্র মন্ত্রক শনিবার জানিয়েছে, জান্তার প্রধান মিন অং লেইংকে বাদ দেওয়ার পদক্ষেপটি ছিল "আসিয়ানের বিশ্বাসযোগ্যতা বজায় রাখার জন্য কঠিন, কিন্তু প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত।"
বিবৃতিতে মিয়ানমারে শান্তি ফিরিয়ে আনার জন্য যে পরিকল্পনায় এপ্রিলে আসিয়ানের সঙ্গে সম্মত হয়েছিল জান্তা, তার অগ্রগতির অভাব উল্লেখ করা হয়েছে।
মিয়ানমারের সামরিক সরকারের একজন মুখপাত্র এই সিদ্ধান্তের জন্য "বিদেশী হস্তক্ষেপকে" দায়ী করেছেন।
জান্তার মুখপাত্র জ মিন তুন বিবিসির বর্মী সংবাদ বিভাগকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিরা আসিয়ানের অন্যান্য সদস্য রাষ্ট্রের উপর চাপ প্রয়োগ করে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিয়েছে।
তিনি বলেন, "বিদেশী হস্তক্ষেপও এখানে লক্ষ্য করা গেছে।আমরা জানতে পেরেছি যে কিছু দেশের প্রতিনিধিরা যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রকে গিয়েছে এবং ইইউর পক্ষ থেকেও তাদের চাপ দেয়া হয়েছে।"
জাতিসংঘের মতে, মিয়ানমারে ধর্মঘট ও প্রতিবাদের বিরুদ্ধে অভিযানে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে এক হাজারেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে কয়েক হাজার মানুষকে।এই ঘটনার কারণে দেশটি সম্ভাব্য গণতন্ত্র অর্জন থেকে সরে গেছে এবং তাদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক নিন্দার ঝড় তুলেছে।
সামরিক জান্তা বলছে, মৃতের যে সংখ্যার কথা বলা হয়েছে তা অতিরঞ্জিত।
আসিয়ানের বর্তমান প্রধান, ব্রুনাই বলেন, ২৬-২৮ অক্টোবর শীর্ষ সম্মেলনে মিয়ানমার থেকে রাজনৈতিক প্রতিনিধির উপস্থিত হওয়ার বিষয়ে কোন ঐকমত্যে না পৌঁছানোর কারণে একজন অরাজনৈতিক ব্যক্তিকে আমন্ত্রণ জানানো হবে।
ব্রুনাই এক বিবৃতিতে বলেন, "যেহেতু অপর্যাপ্ত অগ্রগতি হয়েছে ... পাশাপাশি মিয়ানমারের প্রতিশ্রুতি নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে, বিশেষ করে সকল সংশ্লিষ্ট পক্ষের মধ্যে গঠনমূলক সংলাপের বিষয়ে, সেহেতু কিছু আসিয়ান সদস্য রাষ্ট্র মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ বিষয়গুলি পুনরুদ্ধার এবং স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনার জন্য আসিয়ানের পক্ষ থেকে মিয়ানমারকে সময় দেয়ার সুপারিশ করেছে।
এই বিবৃতিতে মিন অং লেইং বা তার পরিবর্তে কাকে আমন্ত্রণ জানানো হবে তা উল্লেখ করা হয়নি।
ব্রুনাই বলেছেন, কিছু সদস্য দেশ জান্তার বিরোধীদের নিয়ে গঠিত, মিয়ানমারের ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্টের কাছ থেকে সম্মেলনে যোগ দেওয়ার জন্য অনুরোধ পেয়েছে।