আন্তর্জাতিক বিচার আদালত আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে নতুন করে রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলার শুনানি শুরু করবে বলে জানিয়েছেন মামলার বাদিপক্ষ গাম্বিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল দাওদা জালৌ। গতকাল শুক্রবার রয়টার্সকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন তিনি।
আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের একজন মুখপাত্রের কাছে শুনানির তারিখ সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলেও তিনি নিশ্চিত করে কিছু জানাননি।
মিয়ানমারের সামরিক জান্তার প্রতিনিধিরা শুনানিতে আন্তর্জাতিক আদালতের বিচারিক এখতিয়ারকে চ্যালেঞ্জ করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
জালৌ বলেন, “২০২২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে এই হাইব্রিড শুনানি শুরু হবে।”
হাইব্রিড শুনানি হলো, মামলার দুই পক্ষের এক পক্ষ সরাসরি আদালতে হাজির থাকেন এবং আরেক পক্ষ করোনা মহামারির কারণে অনলাইনে অংশ নেন।
তিনি আরও জানান, ২০১৯ সালে অং সান সু চি এই মামলার গণশুনানিতে মিয়ানমারের পক্ষে প্রথম নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। যেহেতু সামরিক বাহিনী তাকে ক্ষমতাচ্যুত করেছে তাই সামরিক জান্তা আনুষ্ঠানিকভাবে এই মামলায় সু চির পরিবর্তে আন্তর্জাতিক আদালতে মিয়ানমারের প্রতিনিধিত্ব করবে।
২০১৭ সালে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর নিধন অভিযানে দেশটির রাখাইন রাজ্যের প্রায় ৭ লাখ ৩০ হাজার রোহিঙ্গা প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। জাতিসংঘের তদন্ত দল তাদের প্রতিবেদনে জানায়, “গণহত্যার উদ্দেশ্যেই” এই হামলা চালায় মিয়ানমারের সেনাবাহিনী।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে শান্তিতে নোবেলজয়ী অং সান সু চি নিজে দ্য হেগে আন্তর্জাতিক আদালতের শুনানিতে হাজির হয়ে মামলা খারিজের আবেদন করেন।
২০২১ সালে এক সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত এই নেত্রীকে ছয় বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে দেশটির বর্তমান সামরিক জান্তা। তার বিরুদ্ধে আরও কয়েকটি মামলা চলমান রয়েছে।
জোর করে ক্ষমতা দখলকারী সামরিক জান্তা আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ে এবং জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালতে নিজেদের মিয়ানমারের বৈধ শাসক হিসেবে প্রমাণ করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, সামরিক জান্তা আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে প্রতি ছয় মাস পর পর রোহিঙ্গা বিষয়ক আদালত নির্দেশিত প্রতিবেদন উপস্থাপন করে আসছে। যদিও এই প্রতিবেদনগুলো সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত নয়।
২১ ফেব্রুয়ারি থেকে অনুষ্ঠিত শুনানিতে মিয়ানমারের পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের বিচারিক এখতিয়ার নিয়ে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হবে। এই বিষয়টি নিস্পত্তি হলে গণহত্যার ব্যাপারে শুনানি হবে।