সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে উস্কানি এবং কোভিড আইন ভঙ্গের অভিযোগে মিয়ানমারের ক্ষমতাচ্যুত নেত্রী অং সাং সু চিকে সোমবার চার বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে দেশটির সামরিক সরকার। নোবেল বিজয়ী নেত্রীর বিরুদ্ধে সম্ভাব্য কয়েক দফা শাস্তির মধ্যে এটিই প্রথম যার বাকিগুলোতে তাঁর এক দশকেরও বেশী সময়ের শাস্তি হতে পারে বলে সরকারের একজন মুখপাত্র এএফপিকে জানিয়েছেন।
৭৬ বছর বয়সী সুচি বন্দী হন পহেলা ফেব্রুয়ারি, জেনারেলরা সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে আগের সরকারকে হঠিয়ে ক্ষমতা দখলের দিন থেকেই। আর এর মধ্যে দিয়ে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার এই দেশটির সংক্ষিপ্ত সময়ের গণতন্ত্রের পতন ঘটে।
তখন থেকে তাঁর বিরুদ্ধে ধারাবাহিক অভিযোগ তোলা হয়, যার মধ্যে রয়েছে অফিসিয়াল গোপনীয়তার আইন লঙ্ঘন, দুর্নীতি ও নির্বাচন জালিয়াতি এবং সেসব অভিযোগের সাজা হলে তাঁকে কয়েক দশকের কারাদণ্ড দেয়া হতে পারে।
সোমবার সুচিকে সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে উস্কানি দেয়ার অভিযোগে দুই বছর এবং কোভিডের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ আইন ভঙ্গের অভিযোগে আরও দুই বছরের সাজা দেয়া হয়েছে বলে টেলিফোনে এএফপিকে জানিয়েছেন জান্তা মুখপাত্র জাও মিন তুন।
তিনি বলেন সাবেক প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টকে একই অভিযোগে চার বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে, তবে তাঁদেরকে এখনও জেলে নেয়া হয়নি।
নাইপিদাও-এর বিশেষ আদালতে সাংবাদিকদের যাবার অনুমতি দেয়া হয়নি এবং সুচির আইনজীবীদেরকে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে এনডিএল-এর অন্যান্য সিনিয়র সদস্যদের বিরুদ্ধে দীর্ঘ সাজা দেয়া হয়েছে।
সাবেক একজন মুখ্য মন্ত্রীকে এ মাসে ৭৫ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে এবং সুচির এক ঘনিষ্ঠ সহযোগীর ২০ বছরের জেল হয়েছে।
সুচির শাস্তির নিন্দা জানিয়েছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
অ্যামনেস্টির প্রচারণা বিষয়ক উপ আঞ্চলিক পরিচালক মিং ইয়ু হাহ বলেন, “মিথ্যা অভিযোগে সুচির কঠোর শাস্তি দেয়া, মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী যে বিরোধী দলকে ধংস করতে চায় ও স্বাধীনতাকে গলা টিপে মারতে চায় তার সর্ব সাম্প্রতিক উদাহরণ।
ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের মিয়ানমারের সিনিয়র অ্যাডভাইজার রিচার্ড হর্সে বলেন, এই শাস্তি “প্রতিশোধমূলক এবং সামরিক বাহিনীর শক্তির প্রদর্শন”।
রবিবার রেঙ্গুনের বাণিজ্যিক এলাকায় শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করার সময় সেনা সদস্যরা অন্তত তিনজনকে আহত করেন বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।
রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম বলেছে একজনের আঘাত মারাত্মক এবং অনুমতি ছাড়া বিক্ষোভ করায় ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।