অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

প্রতিষ্ঠার দুই দশক: তদন্ত পরিচালনায় দুদক কি একপাক্ষিক?


দুর্নীতি দমন কমিশন(দুদক)
দুর্নীতি দমন কমিশন(দুদক)

বাংলাদেশে দুর্নীতি প্রতিরোধে গঠন হয়েছিল দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। রাজনৈতিক প্রভাবের ঊর্ধ্বে গিয়ে একটি স্বাধীন সংস্থা হিসেবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কাজ করার লক্ষ্যে ২০০৪ সালের ৯ মে প্রতিষ্ঠিত এই সংস্থাটির কার্যক্রম নিয়ে বিগত দুই দশক ধরেই নাগরিক সমাজের সমালোচনা অব্যাহত আছে।

বিশেষত, দুর্নীতি প্রতিরোধে দুদকের কার্যক্রম অনেকটাই একমুখী বলে অভিযোগ করে আসছেন বিশিষ্ট নাগরিকেরা।

তাদের অভিযোগ, প্রতিষ্ঠার পর থেকে দুদকের কার্যক্রম অনেকটাই ‘রাজনৈতিকভাবে’ প্রভাবিত।

‘কথিত সরকারবিরোধী’ হিসেবে পরিচিত ব্যক্তিদের মামলার ক্ষেত্রে দুদকের আচরণ অনেকটাই একপাক্ষিক।

এ ক্ষেত্রে গত কয়েক বছর ধরে দুদকের কার্যক্রম বিশ্লেষণ করলে স্পষ্ট, ‘ক্ষমতাসীন ও প্রভাবশালীদের’ ক্ষেত্রে দুদক নমনীয়তা দেখিয়ে আসছে।

অন্যদিকে যাদের সঙ্গে ‘সরকারপক্ষের সদ্ভাব’ নেই, তাদের মামলাগুলো সচল থাকে নিয়মিত।

এ ক্ষেত্রে নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে দুদকের করা মামলাটি উল্লেখযোগ্য।

সব মিলিয়ে শান্তিতে নোবেলজয়ী এই অর্থনীতিবিদের বিরুদ্ধে দুটি ফৌজদারিসহ ১৪০টির মতো মামলা চলমান রয়েছে বলে জানিয়েছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন।

‘অধিকাংশ অভিযোগ আমলে নিতে পারছে না দুদক’

২০২৩ সালে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, কমিশনে ১৫ হাজার ৪৩৭টি অভিযোগ জমা পড়ে।

এসব অভিযোগের মধ্যে ৮৪৫টি অনুসন্ধানের জন্য গ্রহণ করা হয়; যা শতাংশের হিসাবে মাত্র ৫ দশমিক ৪৮।

বাকি ৯৪ দশমিক ৫২ শতাংশ অভিযোগ দুদকের তফসিলভুক্ত না হওয়ায় আমলে নেওয়া হয়নি।

দুদকের তফসিলভুক্ত না হওয়ায় ৯১৩টি অভিযোগের বিষয়ে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।

৩৪১টি মামলা আদালতে নিষ্পত্তি হয়েছে।

৬২ দশমিক ৩০ শতাংশ মামলায় আসামির সাজা এবং ৩৭ দশমিক ৭০ শতাংশ মামলায় আসামি খালাস পেয়েছে।

১ হাজার ৬৮৩ কোটি ৬৭ লাখ ৩৭ হাজার ৫৪৬ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এ ছাড়া ১৭ কোটি ৯৭ লাখ ৬৩ হাজার ৭৫ টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়।

একইভাবে ২০২২ সালে ১৯ হাজার ৩৩৮টি অভিযোগ আসে দুদকে।

তার মধ্যে ৯০১টি অভিযোগ অনুসন্ধান করে।

আর ৩ হাজার ১৫২টি অভিযোগ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়।

এই বছর ২২৪টি মামলার চার্জশিট অনুমোদন করে।

সাজা হয় ৬৪ দশমিক ১৭টির।

আর খালাস পায় ৩৫ দশমিক ৮৩ শতাংশ আসামি।

জরিমানা আদায় করা হয় ২৬৩২ কোটি ৪১ লাখ ৪৩ হাজার ৭৮৩ কোটি টাকা।

আর বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে ১৩ কোটি ৯৬ লাখ ১৯ হাজার ১৭৬ কোটি টাকা।

২০২১ সালে ১৪ হাজার ৭৮৯টি অভিযোগ পায় দুদক।

তার মধ্য থেকে ৫৩৩টি অভিযোগ অনুসন্ধান করে।

২ হাজার ৮৮৯টি অভিযোগ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। ২

৬০টি মামলা চার্জশিট অনুমোদন করে।

এই বছর দুদকের মামলার সাজার হার ৬০ শতাংশ।

খালাস পায় ৪০ শতাংশ আসামি।

জরিমানা আদায় করে ৭৫ কোটি ১৮ লাখ ৩৫ হাজার ৩১৭ টাকা।

আর ১০ কোটি ২০ লাখ ৮৬ হাজার ৯২৮ টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়।

২০২০ সালে দুদকে ১৮ হাজার ৪৮৯টি অভিযোগ আসে।

তার মধ্যে ৮২২টি অভিযোগ অনুসন্ধান করে।

বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে ২ হাজার ৪৬৯টি অভিযোগ পাঠানো হয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য।

এই বছর দুদক ২২৮টি মামলার চার্জশিট অনুমোদন করে।

মামলায় সাজার হার ৭২ শতাংশ।

অর্থাৎ ২৮ শতাংশ আসামি খালাস পেয়েছে।

জরিমানা আদায় করা হয়েছে ৭২ কোটি ৪৮ লাখ ৮৩ হাজার ১৩০ টাকা।

বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে ৩ কোটি ৩ লাখ ৬৯ হাজার টাকা।

২০১৯ সালে দুদক ২১ হাজার ৩৭১টি অভিযোগ পায়।

তার মধ্যে ১ হাজার ৭১০টি অনুসন্ধানের জন্য গ্রহণ করে।

আর ৩ হাজার ৬২৭টি অভিযোগ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য।

এই বছর দুদক ২৬৭টি মামলার চার্জশিট অনুমোদন করে।

মামলায় সাজার হার ৬৩ শতাংশ।

৩৭ শতাংশ আসামি খালাস পায়।

বিভিন্ন মামলায় ৩৪৯৭ কোটি ৬ লাখ ৮৪ হাজার ৭৫৯ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।

আর ৪৩৬ কোটি ৮৮ লাখ ৯৫ হাজার ৩৭৪ টাকা বাজেয়াপ্ত করে।

২০২৪ সালের দুদকের ত্রৈমাসিক প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে, জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত দুদক ৯০টি মামলা করেছে।

তার মধ্যে ৭৭টি চার্জশিট দিয়েছে।

প্রতিষ্ঠার ২০ বছরে নানা সমালোচনার মুখে দুদক

দেশে দুর্নীতির বিস্তার রোধে ২০০৪ সালে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) গঠন করা হয়েছিল। ২

০০৪ সালের আগে এটা দুর্নীতি দমন ব্যুরো ছিল।

রাজনৈতিক প্রভাবের ঊর্ধ্বে গিয়ে একটি স্বাধীন সংস্থা হিসেবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কাজ করার লক্ষ্যে 'দুর্নীতি দমন ব্যুরো' বিলুপ্ত করে 'দুর্নীতি দমন কমিশন' প্রতিষ্ঠা করা হয়।

তবে প্রতিষ্ঠার পর গত ২০ বছরে নানা সমালোচনার মুখে পড়েছে এ প্রতিষ্ঠানটি।

সংস্থাটি নিয়ে অভিযোগ উঠেছে– সরকারের পছন্দ অনুযায়ী দুর্নীতির মামলা দায়ের করা হয় কিংবা দায়মুক্তি দেয়া হয়।

বিশেষ করে সরকার-সংশ্লিষ্ট রাজনীতিবিদ, আমলা ও ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ থাকলে সেগুলো খুব কমই আমলে নেয়া হয়।

অন্যদিকে সরকারের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দুদক হয়রানি করে।

এ বিষয়ে ভয়েস অব আমেরিকার সঙ্গে কথা বলেছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল, বাংলাদেশ (টিআইবি)-র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।

তিনি বলেন, “বিরোধী দল বা কোনও রাজনৈতিক দল কী বলল, সেটা মুখ্য বিষয় না। আজকে যারা বিরোধী দলে আছেন তাদের বিবেচনায় দুদক শুধুমাত্র তাদেরকে টার্গেট করছে। কিন্তু দুদক যখন প্রতিষ্ঠা হয়, তখন তারাই ক্ষমতায় ছিল। তখন থেকেই দুদকের ওপর রাজনৈতিক প্রভাব শুরু। সেটার ধারাবাহিকতা চলে আসছে। যখন যে দল বা সরকার ক্ষমতায় থাকে তারা চেষ্টা করে দুদককে তাদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে।”

দুদকের বাইরে থেকে শুধু রাজনৈতিক বা সরকারের প্রভাব আছে তাই নয়, তাদের অভ্যন্তরেও অনেক জটিলতা ও সমস্যা আছে

তিনি বলেন, “তার মধ্যে বিভিন্ন প্রক্রিয়া আছে– দুদকের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় রাজনৈতিক প্রভাব। এখন পর্যন্ত রাজনৈতিক বিবেচনার বাইরে দুদকের চেয়ারম্যান নিয়োগ হয়েছে, এটা বলার সুযোগ নেই; একমাত্র তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ছাড়া। সেটা নিয়েও অনেক বিতর্ক আছে। কাজেই দুদক প্রতিষ্ঠান হিসেবে সব সময় রাজনৈতিক প্রভাবযুক্ত ছিল, সেটা এখনও আছে। কাজেই এটা আমাদের শঙ্কা, ব্যর্থতা ও উদ্বেগের জায়গা বলব।”

“দুদকের বাইরে থেকে শুধু রাজনৈতিক বা সরকারের প্রভাব আছে তাই নয়, তাদের অভ্যন্তরেও অনেক জটিলতা ও সমস্যা আছে” – বলেও মন্তব্য করেন ইফতেখারুজ্জামান।

তিনি বলেন, “আমলাতন্ত্র কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত একটি প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত হয়েছে দীর্ঘ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে। সেখানে দুদকের কমিশনারের যে ক্ষমতা, সেটা আমলাতন্ত্রের হাতে চলে গেছে।”

“দুদকের দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণের কার্যক্রম যে বিরল, সেটা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই” – যোগ করেন ইফতেখারুজ্জামান।

তিনি আরও বলেন, “কখন-কখনও চুনোপুঁটি নিয়ে টানাহেঁচড়া করা হয় লোকদেখানো ভাবের মতো। বাস্তবে যারা দুর্নীতির মূল হোতা, তাদের পরিচয় ও অবস্থান বিবেচনায় দুদক অনেক ক্ষেত্রে কাজ করে থাকে বলে অভিযোগ আছে। সেই কারণে দুদকের প্রত্যাশিত সাফল্য অর্জিত হতে দেখছি না আমরা।”

দুদকের কর্মকাণ্ড যার পক্ষে যায় সে পক্ষে বলে, আর যার বিপক্ষে যায় সেই বিপক্ষে বলে

জানতে চাইলে দুদক কমিশনার জহুরুল হক ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেন, “দুদককে নিয়ে কে, কী বলে– তা নিয়ে আমরা চিন্তা করি না। আমাদেরও সার্থকতা-ব্যর্থতা আছে। কোনও প্রতিষ্ঠান তো শতভাগ সার্থক হবে না। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। আইন অনুযায়ী যতটুকু পারি চেষ্টা করে যাচ্ছি। সবকিছু কমিশনে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত হয়।”

“দুদকের কর্মকাণ্ড যার পক্ষে যায় সে পক্ষে বলে, আর যার বিপক্ষে যায় সেই বিপক্ষে বলে” – দাবি করেন জহুরুল হক।

তিনি বলেন, “এই বলাটাকে আমরা কিছু মনে করি না। আমরা দেখি আইন অনুযায়ী কাজ করেছি কিনা। সব কাজে আমাদের সার্থকতা আছে, তাও আমি বলি না। আমাদের তো ব্যর্থতা আছে। কোনও প্রতিষ্ঠান নেই শতভাগ সার্থক। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি।”

বিএনপির নেতার মামলা সচল, আ.লীগের স্থবির

২০২৩ সালের ১৩ জানুয়ারি ‘অর্গানাইজড ক্রাইম অ্যান্ড করাপশন রিপোর্টিং প্রজেক্ট’ (ওসিসিআরপি)-এর ওয়েবসাইটে এক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

এতে বলা হয়– আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মো. আবদুস সোবহান গোলাপ যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে ৪০ লাখ ডলার ব্যয়ে একাধিক বাড়ি কিনেছেন।

গোলাপ ২০১৪ সালে প্রথম নিউইয়র্কে অ্যাপার্টমেন্ট কেনা শুরু করেন। পরের পাঁচ বছরে তিনি নিউইয়র্কে মোট ৯টি প্রপার্টির (ফ্ল্যাট বা বাড়ি) মালিক হন। এ

সব সম্পত্তির মূল্য ৪০ লাখ ডলারের বেশি।

প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, ২০১৪ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে আবদুস সোবহান জ্যাকসন হাইটসের একটি আলিশান ভবনে পাঁচটি কনডোমিনিয়াম কিনেছিলেন।

তৎকালীন সময়ে যার দাম ছিল প্রায় ২ দশমিক ৪ মিলিয়ন ডলার।

আরও তিনটি ভবনে তিনটি অ্যাপার্টমেন্ট কিনেছিলেন, যার দাম ৬ লাখ ৮০ হাজার ডলার।

২০১৯ সালে আবদুস সোবহান সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর জ্যাকসন হাইটসে আরও একটি সম্পত্তি কেনেন প্রায় ১ দশমিক ২ মিলিয়ন ডলারের বিনিময়ে। এসব সম্পত্তির সবই নগদ টাকায় কেনা হয়েছিল।

এই প্রতিবেদনের পরে বিগত বছরের ২৬ জানুয়ারি আবদুস সোবহানের বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগ দাখিল করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অনুসারী এই আইনজীবী জাতীয় সংসদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিনিধিত্ব করছেন।

২০২৩ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের বিচারপতিদের একটি বেঞ্চ আবদুস সোবহানের যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে ৯টি বাড়ি কেনার বিষয়ে অনুসন্ধান করতে দুদককে নির্দেশ দেন।

এর পরপরই মাদারীপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য আবদুস সোবহানের বাড়ি ক্রয়সহ অর্থ পাচারের অভিযোগ অনুসন্ধান শুরু করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

দুদক সূত্রে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রে আবদুস সোবহানের নামে বাড়ি রয়েছে কিনা, তা যাচাই-বাছাইয়ে এমএলএআর (মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট রিকোয়েস্ট) ২০২৩ সালের ২০ জুন পাঠানো হয়। যদিও এমএলএআরের জবাব এখনও পাওয়া যায়নি। যার ফলে, অনুসন্ধান কাজ স্থবির হয়ে আছে।

পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের কোনও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আবদুস সোবহান গোলাপ এবং তার পরিবারের কোনও সদস্যের আর্থিক লেনদেনের কোনও তথ্য রয়েছে কিনা, এ সংক্রান্ত তথ্য-উপাত্ত চেয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে চিঠি দেয় দুদক।

আবদুস সোবহান গোলাপের বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান এখন কোন পর্যায়ে রয়েছে– জানতে চাইলে জহুরুল হক বলেন, “সেটা অনেক আগের কথা। অনেক আলোচনা ছিল। এখন মনে নেই।”

২০২৩ সালের ২৬ ডিসেম্বর প্লট জালিয়াতি ও নকশা বহির্ভূতভাবে হোটেল সারিনা নির্মাণের অভিযোগে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও তার স্ত্রীসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক।

দুদকের অভিযোগে বলা হয়, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের মালিকানাধীন বনানীর ১৭ নং রোডের ২৭ নং প্লটটি ডেভেলপ করার নামে ২২ ভবনের অধিকাংশ ফ্লোর আত্মসাৎ করেছে।

রাজউকের নকশা বহির্ভূতভাবে ওই ভবন নির্মাণ করেছে।

এ ছাড়া ২৫ নং প্লটেও নকশা বহির্ভূতভাবে ২১ তলা ভবনবিশিষ্ট হোটেল সারিনা নির্মাণ করা হয়।

আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯/১০৯/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/৪২০ ধারায় মামলাটি দায়ের করা হয়।

মামলার এজাহারে আরও বলা হয়– আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং তার স্ত্রী তাহেরা খসরু আলমের দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণী যাচাইকালে দেখা যায়, তারা উভয়েই বনানী এলাকার ১৭ নং রোডের ২৭ ও ২৫ নং প্লটে অবস্থিত পাঁচ তারকা হোটেল সারিনা ইন লিমিটেডের শেয়ারহোল্ডার।

এর আগে ২০১৮ সালের আগস্টে আমীর খসরু মাহমুদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক।

২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর তিনি ও তার স্ত্রী তাহেরা আলমকে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে চিঠিও দিয়েছিল সংস্থাটি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেন, “এই মামলার কার্যক্রম এখন আদালতে চলমান রয়েছে।”

প্রসঙ্গত, দুদকের করা মামলাতেই গ্রেফতার হয়ে কারাগারে আছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া।

বর্তমানে সরকারের শর্তসাপেক্ষ মুক্তিতে আছেন বিএনপির এই চেয়ারপারসন।

এ ছাড়া, বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন এলাকায় মামলা চলছে দুদকের।

বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ
বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ

প্রভাবশালীদের ক্ষেত্রে কি দুর্বল দুদক?

বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে অস্বাভাবিক সম্পদ অর্জনের অভিযোগ তুলে গত ৩১ মার্চ স্থানীয় একটি গণমাধ্যমে দুই পর্বের রিপোর্ট প্রকাশিত হয়।

‘বেনজীরের ঘরে আলাদীনের চেরাগ’ ও ‘বনের জমিতে বেনজীরের রিসোর্ট’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনের বিষয়ে অনুসন্ধান চেয়ে ৪ এপ্রিল দুদকে আবেদন করেন আইনজীবী মো. সালাহ উদ্দিন।

কিন্তু দুদকের পক্ষ থেকে কোনও সাড়া না পেয়ে ২১ এপ্রিল আদালতের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন তিনি।

২৩ এপ্রিল বেনজীরের সম্পদ নিয়ে ওঠা অভিযোগের অনুসন্ধান প্রতিবেদন আগামী দুই মাসের মধ্যে জমা দিতে দুদককে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।

এরপর ২৩ এপ্রিল দুদক সচিব খোরশেদা ইয়াসমীন সাংবাদিকদের বলেন, "বেনজীর আহমেদের সম্পদ অনুসন্ধানে দুদকের তিন সদস্যের একটি কমিটি কাজ শুরু করেছে। তার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন নিয়ে গত ৩১ মার্চ একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। পরবর্তী সময়ে আরও কিছু গণমাধ্যমে একই ধরনের অভিযোগ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এসব অভিযোগের বিষয়ে দুদক আইন অনুযায়ী কার্যক্রম শুরু করেছে।"

প্রভাবশালীদের ক্ষেত্রে আদালতের নির্দেশের পর কেন দুদক অনুসন্ধান কার্যক্রম হাতে নেয়– ভয়েস অফ আমেরিকার এমন প্রশ্নের জবাবে খোরশেদা ইয়াসমীন বলেছিলেন, “গণমাধ্যমে অভিযোগ প্রকাশিত হওয়ার পর দুজন কমিশনার দেশের বাইরে থাকায় এবং ঈদের ছুটির কারণে ১৮ এপ্রিল অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এটা ঠিক নয়, দুদক আদালতের দিকে থাকিয়ে থাকে।”

এ বিষয়ে দুদকের সিনিয়র আইনজীবী খুরশীদ আলম খান ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেন, “কোর্ট দুই মাসের সময় দিয়েছেন প্রতিবেদন জমা দিতে। সেটির কাজ চলমান রয়েছে। যা-ই হোক না কেন, এই সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে হবে।”

ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী তাকসিম এ খান
ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী তাকসিম এ খান

তাকসিম এ খানের বিরুদ্ধে অভিযোগের ব্যাপারে ফাইল দেখে বলতে হবে: দুদক সচিব

২০২৩ সালের ৮ জানুয়ারি ঢাকার একটি দৈনিক পত্রিকার ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী তাকসিম এ খানকে নিয়ে ‘একটি-দুটি নয়, ১৪ বাড়ি! দেশে নয়, সুদূর যুক্তরাষ্ট্রে’ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

এতে বলা হয়– সব বাড়ির দাম টাকার অঙ্কে হাজার কোটি ছাড়াবে।

দেশ থেকে অর্থ পাচার করে তিনি এসব বাড়ির মালিক হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

বাড়ি কেনার অর্থের উৎস ও লেনদেন প্রক্রিয়ার তথ্য খুঁজতে নেমেছে ইন্টারপোলসহ একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা।

বিপুল পরিমাণ অর্থে একের পর এক বাড়ি কেনার ঘটনায় দেশটির গোয়েন্দা তালিকায় সন্দেহভাজন হিসেবে তাকসিমের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

৯ জানুয়ারি প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনেন দুদকের সিনিয়র আইনজীবী খুরশিদ আলম খান।

তাকসিম এ খানের যুক্তরাষ্ট্রে ১৪টি বাড়ি কেনার বিষয়ে দুদকে দাখিল করা দুটি অভিযোগের অনুসন্ধানের অগ্রগতি জানতে চান হাইকোর্ট।

দুদককে ১৫ দিনের মধ্যে এ বিষয়ে জানাতে বলেছেন আদালত।

এরপর ১১ জানুয়ারি ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী তাকসিম এ খানের যুক্তরাষ্ট্রে ১৪টি বাড়ির বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু হয়।

দুদক উপপরিচালক সৈয়দ নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি টিম অভিযোগটি অনুসন্ধান করছে।

যদিও এই ওয়াসার নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তাকসিম এ খান দাবি করেন, যুক্তরাষ্ট্রে তার কোনও বাড়ি নেই, "সেখানে ১৪টি বাড়ির ব্যাপারে 'ডাহা মিথ্যা' একটা প্রতিবেদন ছাপানো হলো।"

সেখানে তার স্ত্রী ও একমাত্র সন্তান থাকে, তারা দুজনেই ভালো চাকরি করে বলে জানান তাকসিম।

তার ভাষ্য, "তারা সেখানে চমৎকারভাবে প্রতিষ্ঠিত। তাই তাদের কাছে টাকা পাঠানোর কোনও দরকার নেই। আমার টাকারও তাদের কোনও প্রয়োজন নেই। বরং আমার যদি প্রয়োজন হয় তাহলে তারাই আমাকে মাঝেমধ্যে টাকা পাঠায়।"

এ বিষয়ে জানতে চাইলে দুদক সচিব খোরশেদা ইয়াসমীন ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেন, "এ বিষয়ে এখন কিছু বলতে পারব না। ফাইল দেখে বলতে হবে।"

প্রায় একই কথা বলেন দুদক কমিশনার জহুরুল হক।

দুদক আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, “এটা তো এখন আমার কাছে আসে নাই। দুদক থেকে জেনে বলতে হবে।”

প্রসঙ্গত, দুদকের নিয়ম অনুযায়ী– কোনও অভিযোগ এলে প্রথম ধাপে সেটি দুদকের যাচাই-বাছাই কমিটিতে ওঠে।

দ্বিতীয় ধাপে তারপর সেটি অনুসন্ধান করা হবে কিনা, তার সিদ্ধান্ত হয় কমিশন সভায়।

সভায় অভিযোগ অনুসন্ধানের উপযোগী মনে করা হলে তৃতীয় ধাপে অনুসন্ধানের জন্য একজন কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়।

অনুসন্ধানে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে চতুর্থ ধাপে মামলা করে দুদক।

পঞ্চম ধাপে মামলার তদন্তে কর্মকর্তা নিয়োগ করা।

সপ্তম ধাপে মামলার চার্জশিট আদালতে দেওয়া হয়।

এ ক্ষেত্রে কোনও অভিযোগের মামলা হওয়ার পরই সাধারণ আইনজীবীদের কাছে বিষয়টি যায়।

৫৮ মামলার চার্জশিটের আসামি বাচ্চু 'ধরাছোঁয়ার বাইরে'

আট বছর তদন্ত শেষে ২০২৩ সালের ১২ জুন বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারি ৫৯টি মামলার ৫৮টিতে ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হাই বাচ্চুসহ ১৪৭ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বর্তমানে এসব মামলা আদালতে অভিযোগ গঠনের জন্য শুনানিতে রয়েছে।

যদিও ২০১৫ সালে এসব মামলা দায়ের করা হলেও এজাহারে আসামি ছিলেন না আবদুল হাই বাচ্চু; যা নিয়ে ২০১৮ সালের ৩০ মে দুদকের ১০ তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে তলব করে ক্ষোভ, উষ্মা ও হতাশা প্রকাশ করেছিলেন বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের হাইকোর্ট বেঞ্চ।

প্রকৃত হোতাসহ দোষীদের আসামি করে তদন্ত শেষ করার নির্দেশ দেন।

তৎকালীন সংসদের সরকারি ও বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা দুদককে নিয়ে বিরূপ সমালোচনা করে।

সমালোচনার মুখে শেষ পর্যন্ত চার্জশিটে বাচ্চুকে আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে দুদক।

২০০৯ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৪ সালের জুলাই পর্যন্ত দুই দফায় রাষ্ট্রায়ত্ত বেসিক ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলেন শেখ আবদুল হাই।

এ সময়ে ব্যাংকটি থেকে ২ হাজার ২৬৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচার হয় বলে দুদকের অনুসন্ধানে উঠে আসে।

চার্জশিটভুক্ত আসামি করা হলেও আবদুল হাই বাচ্চুকে গ্রেফতার করেনি দুদক। গ্রেফতারের চেষ্টাও করেনি সংস্থাটি।

যদিও দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৩ সালের ২১ জুন তাকে বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত।

বেসিক ব্যাংকের ঋণ কেলেঙ্কারি নিয়ে গণমাধ্যম প্রকাশিত রিপোর্ট ও বিভিন্ন মাধ্যমে পাওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে ২০১৩ সালে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক।

প্রায় তিন বছর অনুসন্ধান শেষে ২০১৫ সালে সেপ্টেম্বর মাসে ৫৮টি মামলা করে।

বেসিক ব্যাংকের ঋণ কেলেঙ্কারির অনুসন্ধান শুরুর পর ২০১৩ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত দুদকের তিনজন চেয়ারম্যান বদল হয়েছে।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, “বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারি মামলা এখন অভিযোগ গঠনের পর্যায়ে আছে।”

এসব বিষয় নিয়ে দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহকে একাধিকবার ফোন ও মেসেজ পাঠিয়ে বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

পরবর্তী সময়ে তার একান্ত সচিব ফজলুল জাহিদ পাভেলের সঙ্গে যোগাযোগ করে সাক্ষাতের সময় চাওয়া হলে কোন বিষয়ে দুদক চেয়ারম্যানের বক্তব্য দরকার জানতে চান।

পরে দুদক চেয়ারম্যান মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহর পক্ষে ফজলুল জাহিদ পাভেল ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেন, "সবগুলো অভিযোগের অনুসন্ধান চলছে। অনুসন্ধান কোন পর্যায়ে, সেটা তো এই মুহূর্তে বলা সম্ভব নয়। তবে স্বাধীনভাবে অনুসন্ধান চলছে।"

দুদক দলীয় কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে: বিএনপি

দুদকের কার্যক্রম নিয়ে জানতে চাইলে দুদকের মামলায় সাজাপ্রাপ্ত বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেন, “বাংলাদেশে কোনও প্রতিষ্ঠানই এখন আর প্রতিষ্ঠান নেই। সব প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। দলীয় কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। বিচারালয় নষ্ট হয়ে গেছে। আওয়ামী লীগের লোক হলে দুদক 'ক্লিন সার্টিফিকেট' দিয়ে দেয়।”

তিনি আরও বলেন, “আর আমাদেরকে ইনকাম ট্যাক্সের মামলা দিয়ে সাজা দেয়। ইনকাম ট্যাক্সের মামলায় কখনও সাজা হয়? এমন তো না যে ইনকাম ট্যাক্স দেয়া হয়নি? দিয়েছি। কিছু হয়তো অসতর্কতা থাকতে পারে। তার অর্থ তো এই নয় যে সাজা দিয়ে দেবে। ভুল থাকলে সেটা পুনরায় দেওয়া যাবে। আর এটা তো আমরা দেখি না, ইনকাম ট্যাক্স উপদেষ্টা যা বলে তাই করি।”

“আওয়ামী লীগের লোকের সাজা হয় না, বিএনপির নেতাদের সাজা হয়। এটা জাতির জন্য দুর্ভাগ্য” – বলেও যোগ করেন টুকু।

দুদকের ওপর সরকারের রাজনৈতিক প্রভাব নেই: আওয়ামী লীগ

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কামরুল ইসলাম ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেন, দুদক একটি সাংবিধানিক ও সম্পূর্ণ স্বাধীন প্রতিষ্ঠান, "তারা স্বাধীনভাবে কাজ করে, সরকার কোনওভাবেই তাদের কর্মকাণ্ডে হস্তক্ষেপ করে না।"

তিনি বলেন, “দুদক সরকারি দলের প্রতি অনুরক্ত আর বিরোধী দলের নেতাদের প্রতি বিরক্ত, তাদেরকে ডেকে নিয়ে সাজা দেয়– এই বক্তব্য সঠিক নয়। যাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হয় দুদক তাদেরকে ধরে, তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে। আর আদালত তাদেরকে সাজা দেয়।”

“দুদকের ওপর বর্তমান সরকারের কোনও রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে না” – বলেও যোগ করেন কামরুল ইসলাম।

XS
SM
MD
LG