বাংলাদেশের অন্যতম নির্বাচন কমিশনার রাশিদা সুলতানা বলেছেন যে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী সব প্রার্থী কমিশনের কাছে সমান।
“যারা নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করবে, সেক্ষেত্রে দল ও প্রার্থী বিবেচনা না করে তাদের বিরুদ্ধে কমিশন কঠোর ব্যবস্থা নেবে;” বলেন কমিশনার রাশিদা সুলতানা।
শুক্রবার (৩ মে) সিরাজগঞ্জে, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাশী ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন তিনি।
“কে বেশি বা কম ক্ষমতাধর প্রার্থী, তা নিয়ে আমাদের কোনো পক্ষপাতিত্ব নেই;” নির্বাচন কমিশনার রাশিদা সুলতানা যোগ করেন।
নির্বাচন কমিশনার বলেন, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ রক্ষায় কমিশন সক্রিয়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তাই পরিস্থিতির অবনতির কোনো সুযোগ নেই। “আমরা চেষ্টা করেছি এমন একটি পরিবেশ তৈরি করতে, যাতে ভোটাররা নির্ভয়ে ভোট দিতে পারেন;” আরো বলেন তিনি।
অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে পোলিং এজেন্ট নিশ্চিত করতে প্রার্থীদের প্রতি আহবান জানান রাশিদা সুলতানা । তিনি বলেন, পোলিং এজেন্টরা যেকোনো ধরনের অন্যায় ও অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে পারেন।
রাশিদা সুলতানা আরো বলেন, “পোলিং এজেন্টরা শেষ পর্যন্ত ভোটকেন্দ্রে অবস্থান করবেন এবং প্রিসাইডিং অফিসারের সই করা ফলাফল নিয়ে কেন্দ্র ত্যাগ করবেন।”
উপজেলা নির্বাচন
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে চার ধাপে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ২১ মার্চ (বৃহস্পতিবার) প্রথম ধাপের ১৫২টি উপজেলা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। তফসিল অনুযায়ী প্রথম ধাপের মনোনয়নপত্র জমার শেষ দিন ছিলো ১৫ এপ্রিল (সোমবার)। প্রথম ধাপের ভোট গ্রহণ হবে ৮ মে।
দ্বিতীয় ধাপের ১৬১টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে ১ এপ্রিল (সোমবার)। দ্বিতীয় ধাপের মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ছিলো ২১ এপ্রিল। এসব উপজেলায় ভোট গ্রহণ করা হবে ২১ মে।
তৃতীয় ধাপের উপজেলা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয় ১৭ এপ্রিল (বুধবার)। তৃতীয় ধাপে ১১২টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন ২৯ মে অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে, মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) চতুর্থ ধাপের উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। এসব উপজেলায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে ৫ জুন।
চতুর্থ ধাপে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ৯ মে। মনোনয়নপত্র বাছাই হবে ১২ মে। আর মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের বিরুদ্ধে আপিল করা যাবে ১৩ থেকে ১৫ মে পর্যন্ত। আপিল নিষ্পত্তি হবে ১৬ থেকে ১৮ মে। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ১৯ মে। ২০ মে প্রতীক বরাদ্দ করা হবে। চতুর্থ ধাপে ৫৪টি উপজেলায় ভোট হওয়ার কথা রয়েছে।
অংশ না নেয়ার সিদ্ধান্ত বিএনপির
এদিকে, বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ না নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বিএনপির হাইকমান্ড। ১৬ এপ্রিল (মঙ্গলবার) দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষর করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।
এতে বলা হয়, সোমবার (১৫ এপ্রিল) রাতে অনুষ্ঠিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বৈঠকে ভার্চুয়ালি যোগ দেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শেখ হাসিনার সরকার ও তার আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন, বেসামরিক ও পুলিশ প্রশাসন একটি অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করতে পারে না। অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিবেশ নেই বলেও উল্লেখ করে বিএনপি।