বাংলাদেশের বেশিরভাগ জেলা এখন তাপপ্রবাহের কবলে। কিছু অঞ্চলে বইছে তীব্র তাপপ্রবাহ। এসব এলাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি ছাড়িয়ে যাচ্ছে। কোথাও কোথাও তাপমান পৌঁছাচ্ছে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত। পৌঁছেছে।
বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় অবস্থিত আবহাওয়া অফিস ও পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের তথ্য মতে, দেশটির ৪৩ জেলা এখন তাপপ্রবাহের কবলে রয়েছে।আবহাওয়া বিভাগ আরো জানিয়েছে, সামনের দিনগুলোতে তাপমাত্রা ৪২-৪৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠানামা করতে পারে। এপ্রিল জুড়েই এ অবস্থা চলবে বলে আভাস দিয়েছে আবহাওয়া দফতর।
৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রাকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ হিসেবে বিবেচনা করা হয়; ৪০ থেকে ৪১.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসকে তীব্র তাপপ্রবাহ এবং ৩৮ থেকে ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসকে মাঝারি তাপপ্রবাহ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। আর, ৩৬ থেকে ৩৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসকে বিবেচনা করা হয় মৃদু তাপপ্রবাহ হিসেবে।
রবিবার (২১ এপ্রিল) আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, পাবনা, যশোর ও চুয়াডাঙ্গা জেলাজুড়ে এবং ঢাকা, খুলনা বিভাগ ও রাজশাহী জেলার বিভিন্ন অংশে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। আবহাওয়া বিভাগ আরো বলেছে, বরিশাল বিভাগ ও রাজশাহী বিভাগের কিছু অংশ এবং ময়মনসিংহ, মৌলভীবাজার, ফেনী, কক্সবাজার, চাঁদপুর ও রাঙ্গামাটি জেলার কিছু অংশে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।
রংপুর বিভাগে দিনের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়তে পারে এবং দেশের অন্যান্য এলাকায় তা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। আর আর্দ্রতা বাড়তে পারে বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ।
আবহাওয়াবিদ শাহিনুল ইসলাম জানান, রবিবার বিকাল ৩টা পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গায় ছিলো দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। সেখানে ৪২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমান রেকর্ড করা হয়। আর, ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৮ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এদিকে, পাবনা জেলার ঈশ্বরদীতে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ। পাবনা জেলায় চলতি মৌসুমের মধ্যে এটি সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। শনিবার এই জেলায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিলো ৪১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
ঈশ্বরদী আবহাওয়া অফিসের সহকারী পর্যবেক্ষক নাজমুল হক রঞ্জন জানান, ঈশ্বরদীতে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।তাপমাত্রা আরো বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানান তিনি।
অন্যদিকে, তীব্র তাপদাহে চুয়াডাঙ্গা ও পাবনা জেলায় শনিবার (২০ এপ্রিল) হিট স্ট্রোকে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে।শনিবার রাজধানী ঢাকায় তাপমাত্রা ছিলো ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং যশোরে ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
শনিবার (২০ এপ্রিল) সকাল থেকে শুরু হওয়া তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি পাঁচ দিন অপরিবর্তিত থাকতে পারে বলে সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। তাপপ্রবাহের কারণে আগামী ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত সব স্কুল, মাদরাসা ও কলেজ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। প্রচণ্ড গরমের কারণে অনলাইনে ক্লাস নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
রবিবার আবহাওয়ার নিয়মিত বুলেটিনে বলা হয়েছে, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দু'এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে বলে বলা হয়েছে পূর্বাভাসে।
